খালিদ মাসুদ।
লন্ডন হামলার জঙ্গি খালিদ মাসুদ কোনও ‘লোন উল্ফ’ ছিল না। পার্লামেন্ট ভবনে ওই হামলার ফন্দি আঁটা হয়েছিল খুব সংগঠিত ভাবে। মাসুদকে ‘বোড়ে’ হিসেবে সামনে এগিয়ে দিয়েছিল ওই হামলার মূল চক্রীরা। তারাই ওই হামলার জন্য বেশ কয়েক দিন ধরে পিছন থেকে কলকাঠি নেড়ে গিয়েছে। পার্লামেন্টে হামলা চালাতে যাতে মাসুদের কোনও ভুলচুক না হয়, সে জন্য তারা তাকে নানা ভাবে সাহায্য করে গিয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে এক মহিলা সহ যে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের জেরার পর এটাই ধারণা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের। তবে ওই ঘটনায় জড়িত মাসুদের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। জঙ্গিদের ব্যবহার করা তিনটি গাড়ি পাঠানো হয়েছে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য।
তদন্তে নেমে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড জানতে পেরেছে, মাসুদ তারা হুন্ডাই গাড়িটি নিয়ে পার্লামেন্ট ভবনের রেলিংয়ে ধাক্কা মারার ঠিক আগেই কাউকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। তবে পার্লামেন্ট ভবনে হামলা চালানোর সময় মাসুদের সঙ্গে আর কোনও জঙ্গি ছিলেন, এমন প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পুলিশের হাতে আসেনি। পুলিশ এও জানতে পেরেছে, ব্রিটিশ নাগরিক আদ্রিয়ান এমস পরে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে নাম বদলে নিয়ে হয়েছিল খালিদ মাসুদ। ২০০৫ সালে সৌরি আরবের একটি স্কুলে ইংরেজি শিক্ষকের চাকরি করতে গিয়েই মৌলবাদী জঙ্গিদের খপ্পরে পড়ে যায় মাসুদ। তবে তার আগে অস্ত্র রাখার দায়ে বারদু’য়েক জেল খাটা হয়ে গিয়েছিল মাসুদের। ২০০৩ সালে দ্বিতীয় বার জেল থেকে বেরনোর পরেই ফরজানা মালিক নামে এক মুসলিম মহিলাকে বিয়ে করে মাসুদ। আর তখন থেকেই সে ঝুঁকে পড়তে শুরু করে মুসলিম ধর্মের দিকে। তার পর শিক্ষকতার সুবাদে সৌদি আরবে গিয়ে সে আরও বেশি করে ঝুঁকে পড়ে মুসলিম ধর্মের দিকে। কিন্তু তিনটি সন্তান হওয়ার পর স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যায় মাসুদের।
স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড প্রাথমিক তদন্তে এও জানতে পেরেছে, ডিভোর্সের পর দিন-রাতের বেশির ভাগ সময়টাই মাসুদ কাটাত ইন্টারনেটে। আর সেখানে সম্ভবত বেশির ভাগ সময়টাই মাসুদ কাটাত ইসলামিক স্টেটের সদস্যদের সঙ্গে ই-মেল চালাচালি করে।
আরও পড়ুন- বেশির ভাগ ক্যানসারের জন্য দায়ী খারাপ ‘ভাগ্য’, দাবি বিজ্ঞানীদের