হাফিজ সইদ। ফাইল চিত্র।
সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে গত বছর দু’দফায় পাকিস্তানের আদালত ১১ বছরের জেলের সাজা দিয়েছিল তাঁকে। লস্কর-ই-তইবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ মহম্মদ সইদকে কোট লখপত জেলে পাঠানোর কথাও পাক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। হাফিজের বিরুদ্ধে লাহৌরের সন্ত্রাসদমন আদালতের সেই রায় বহাল রয়েছে এখনও। কিন্তু সে দেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, বুধবারের বিস্ফোরণের সময় হাফিজ নিজের বাড়িতেই ছিলেন। বিস্ফোরণের পরে দ্রুত পাক আধাসেনা বাহিনী ‘পঞ্জাব রেঞ্জার্স’ সরিয়ে নিয়ে যায় তাঁকে।
লাহৌরের জোহর এলাকায় বুধবারের বিস্ফোরণস্থলের দেড়শো মিটার দূরের হাফিজের বাড়ি। তাঁকে খুন করার উদ্দেশ্যেই বিস্ফোরণ কি না, সে প্রশ্ন উঠে এসেছে। বুধবারের ওই বিস্ফোরণে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অন্তত ২০। তবে কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী এখনও হামলার দায় নেয়নি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ২৬/১১ মুম্বই সন্ত্রাসের মূল চক্রীর বাড়ির কাছে সব সময় মোতায়েন থাকে আধাসেনা। বুধবারও ছিল তারা। বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ পরেই ওই ঘন বসতিপূর্ণ এলাকা থেকে তাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। বিস্ফোরণস্থলের ফরেন্সিক তদন্তের পাশাপাশি হাফিজের বাড়ির আশপাশের সমস্ত আবাসন এবং দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরা বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায় তারা। ‘জেলবন্দি’ হাফিজের বাড়িতে থাকার প্রমাণ লোপাট করাই এর উদ্দেশ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
ঘটনাচক্রে, বুধবার থেকেই প্যারিসে সন্ত্রাসী কাজকর্মে অর্থনৈতিক জোগানের উপর নজরদারি চালানো সংগঠন ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)-এর সঙ্গে পাক প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার পাকিস্তানকে ‘ধূসর’ থেকে ‘সাদা’ তালিকায় আনার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, হাফিজের সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়াকে আর্থিক মদতের অভিযোগ কয়েক বছর আগেই ইসলামাবাদকে ‘ধূসর’ তালিকায় ফেলেছে এসএটিএফ। জারি হয়েছে কিছু বিধিনিষেধও। এই পরিস্থিতিতে ‘জেলবন্দি’ হাফিজের বাড়িতে থাকার খবর আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের অস্বস্তি বাড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে।