দক্ষিণ লেবাননের একটি গ্রামে হামলা ইজ়রায়েলের। ছবি: এএফপি।
লেবাননের দক্ষিণে সোমবার সকাল থেকে লাগাতার বোমা ফেলছে ইজ়রায়েল। কেঁপে উঠছে জনপদ। ভেঙে গুঁড়ো হচ্ছে ঘরবাড়ি। সোমবার লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রক দাবি করল, ইজ়রায়েলের সোমবারের হামলায় লেবাননে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২৭৪ জনের। আহত হয়েছেন প্রায় ১,০০০ জন। নিহতদের মধ্যে রয়েছে শিশু এবং মহিলাও। লেবাননে বহু এলাকায় বোমা ফেলেছে ইজ়রায়েল। তার আগে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, লেবাননের যে সব বাড়িতে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লা জঙ্গিরা অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে, সেখান থেকে যেন বেরিয়ে আসেন সাধারণ মানুষ।
লেবানন প্রশাসনের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, সেখানকার মানুষ জনকে বাড়ি ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রায় ৮০ হাজার ফোন এসেছে ইজ়রায়েল থেকে। সে দেশের টেলিকম সংস্থার ওগেরোর প্রধান ইমাদ ক্রেইডিয়েহ্ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের কাছে এই ফোন আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই ফোনের জন্য ‘বিশৃঙ্খলতা’ তৈরি হয়।
গত ১১ মাস ধরে হিজবুল্লা গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে ইজ়রায়েলের। সে দেশে হামলা চালিয়েছিল প্যালেস্টাইনের জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস। তাদের সমর্থন জানায় হিজবুল্লাও। তার পর থেকেই শুরু হয় সংঘর্ষ। ফল ভুগছেন সাধারণ মানুষ। গত কয়েক মাস ধরে এই সংঘর্ষ চলাকালীন একে অপরকে লাগাতার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে লেবানন এবং ইজ়রায়েল। হিজবুল্লার হুঁশিয়ারি, যে ভাবে ইজ়রায়েল তাদের উপর হামলা চালাচ্ছে, তার পরিণতি ভুগতে হবে। ইজ়রায়েলের দাবি, হিজবুল্লাকে তারা নির্মূল করবেই। নতুন করে দু’পক্ষের সংঘর্ষের জেরে ইজ়রায়েল-লেবানন সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
গত মঙ্গল এবং বুধবার পর পর দু’দিন পেজার এবং ওয়াকি টকি বিস্ফোরণে লেবাননে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৫১ জনের। হামলার শিকার শিশুরাও। লেবানন জুড়ে এখন রক্তের আকাল। হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়ছে আহতদের ভিড়। এই আবহে সোমবার ইজ়রায়েল দাবি করেছে, লেবাননে প্রায় ৩০০টি হিজবুল্লা ঘাঁটি লক্ষ্য করে বোমা ফেলেছে তারা। হিজবুল্লার পাল্টা দাবি, উত্তর ইজ়রায়েলের তিনটি জায়গায় হামলা চালিয়েছে তারা। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সোমবার সকাল থেকে দেশের দক্ষিণের শহর এবং গ্রামগুলিতে বোমা ফেলছে ইজ়রায়েল। তাতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০০ জন। আহত ১,০০০ জন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন শিশু, মহিলা, স্বাস্থ্যকর্মীরা। লেবাননের দক্ষিণে জ়াওতার গ্রামে থাকে ৬০ বছরের ওয়াফা ইসমাইল। তিনি বলেন, ‘‘বোমার শব্দে আমরা ঘুমাই, আবার জেগে উঠি। আমাদের জীবন এখন এ রকমই।’’