চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। —ফাইল চিত্র।
নির্বাচনের আগে থেকেই হুঁশিয়ারি আসছিল। তাইওয়ানের মানুষকে নাকি ভোট দিতেই নিষেধ করছিলেন জিনপিং। অভিযোগ, একাধিক বার সীমান্তবর্তী এলাকায় সামরিক মহড়ার আয়োজন করে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে বেজিং। কিন্তু হুঁশিয়ারিই সার। চিনের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে তাইওয়ানে আবার ক্ষমতায় এলেন চিন-বিরোধী শাসক লাই চিং তে। ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি)-র নেতা তিনি। ওই দলই তাইওয়ানে ক্ষমতায় ছিল। শনিবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল বলছে, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় আবার জয় পেয়েছে ডিপিপি।
‘কট্টর চিন-বিরোধী’ হিসাবে পরিচিত ডিপিপি। অন্য দিকে, তাইওয়ানের প্রধান বিরোধী দল ‘কুয়োমিনতাং পার্টি’ চিনের প্রতি খানিক নমনীয়। খাতায়কলমে ‘বহুদলীয় নির্বাচন’ হলেও তাইওয়ানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলত এই দু’দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কোনও কোনও সমীক্ষায় ‘তাইওয়ান পিপল্স পার্টি’ (টিপিপি)-র জয়ের সম্ভাবনাও দেখা গিয়েছিল কিছু আসনে। শনিবারের নির্বাচনে ক্ষমতা ধরে রাখল শাসকদলই।
তাইওয়ানের ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) নেতা লাই চিং তে। ছবি: সংগৃহীত।
তাইওয়ানের এই নির্বাচনকে ঘিরে দীর্ঘ দিন ধরেই বিপরীত প্রচারে নেমেছিল চিন। নির্বাচনকে তাদের তরফে যুদ্ধ এবং শান্তির মধ্যে যে কোনও একটি বিকল্প বেছে নেওয়ার মাধ্যম হিসাবে দেখানো হচ্ছিল। অভিযোগ, ভোটের আগে থেকেই তাইওয়ানের প্রতি নতুন বাণিজ্যনীতি প্রয়োগের প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিয়েছে চিন। বেজিং সমর্থিত দলকে ভোটে না-জেতানো হলে বাণিজ্যে বঞ্চনার শিকার হতে পারেন তাইওয়ানবাসী, আশঙ্কা ছিল তেমনই। সেই আশঙ্কা সত্যি হয় কি না, এখন সেটাই দেখার।
বেজিং বরাবরই মনে করে, তাইওয়ান আদতে চিনের অংশ। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সরকারের আমলেও সেই নীতিতে অটল রয়েছে তারা। তবে তাইওয়ান সেই দাবি অস্বীকার করে এসেছে। গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকে চেয়ারম্যান মাও জে দং-এর নেতৃত্বে চিনে সশস্ত্র গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতা দখলের পরে জাতীয়তাবাদী নেতা চিয়াং কাইশেক এবং তাঁর অনুগামীরা ঘাঁটি গড়েছিলেন তাইওয়ান দ্বীপপুঞ্জে। তার পর থেকে মূলত আমেরিকা এবং পশ্চিমী দুনিয়ার আর্থিক ও সামরিক সাহায্যে এখনও টিঁকে আছে ‘পৃথক’ তাইওয়ান। চিনের বিরুদ্ধে তাইওয়ান দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বার বার।