International news

ঈশ্বরের পায়ের ছাপ! নামিবিয়ার মরুভূমির এই সব বৃত্তের রহস্য আজও অজানা

নামিবিয়ার মানুষের বিশ্বাস, সেখানে নাকি এখনও জ্বলজ্বল করছে ঈশ্বরের পায়ের অসংখ্য ছাপ!

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৫:২৫
Share:
০১ ১২

‘ঈশ্বরের পা’ দেখেছেন কখনও? বা ‘ঈশ্বরের পায়ের ছাপ’? যদি কোনওটাই এখনও দেখার সৌভাগ্য না হয়, তা হলে একবার অন্তত ঘুরে আসতে পারেন নামিবিয়া। নামিবিয়ার মানুষের বিশ্বাস, সেখানে নাকি এখনও জ্বলজ্বল করছে ঈশ্বরের পায়ের অসংখ্য ছাপ!

০২ ১২

সে দেশে বিশাল মরুভূমি জুড়ে দেখা মিলবে বৃত্তাকার এমন অসংখ্য ভূমিরূপের। ওই বৃত্তগুলোর মধ্যে কোনও গাছপালা নেই। কিন্তু আশেপাশে রয়েছে প্রচুর গাছপালা। এই বৃত্তগুলোই ঈশ্বরের পায়ের ছাপ, বিশ্বাস করেন তাঁরা। তবে সেটা নেহাতই স্থানীয়দের বিশ্বাস। এমন ভূমিরূপের পিছনে আসল কারণটা কী জানেন?

Advertisement
০৩ ১২

আফ্রিকার নামিবিয়ায় ১৬০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে এই সব বৃত্ত। এই মরু এলাকায় মানুষের বাস প্রায় নেই। ১৯২০ সালে প্রথম এই সব বৃত্তাকার এলাকার খোঁজ মেলে। তার পর থেকেই এর রহস্য উদ্ঘাটনের গবেষণা চলে আসছে।

০৪ ১২

২০১৪ সাল পর্যন্ত একমাত্র নামিবিয়ার এই জায়গাতেই এমন বিস্ময় বৃত্তের কথা জানতে পেরেছিল মানুষ। তার পর পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার নিউম্যানেও হুবহু একই রকম বৃত্তের খোঁজ মেলে।

০৫ ১২

এই বৃত্ত তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত রয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। অনেকে বিশ্বাস করেন, এগুলো নাকি ঈশ্বরের পায়ের ছাপ। কারও আবার দাবি, ‘ড্রাগনের বিষাক্ত নিঃশ্বাস’-এর ফলেই এমন বিস্ময় বৃত্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিষাক্ত নিঃশ্বাসের জন্য ওই বৃত্তের মধ্যে আজও গাছ গজিয়ে উঠতে পারছে না।

০৬ ১২

এমন বৃত্তের সৃষ্টি নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে। যেমন ২০০৮ সালে বিজ্ঞানী অ্যাঞ্জেলিক জওবার্ট দাবি করেন, ইউফবিয়া ডামারানা নামে এক গাছের মৃত্যুর পর ওই গাছের দেহ নিঃসৃত টক্সিনের জন্য জায়গাগুলোতে কোনও গাছ জন্মাতে পারেনি। অংশগুলো বৃত্তাকার হয়ে রয়েছে।

০৭ ১২

২০১২ সালে আবার অন্য এক বিজ্ঞানী দাবি করেন, এমন ভূমিরূপ আসলে উইপোকার দান। কারণ প্রতিটি বৃত্তের গভীরে একপ্রকার মরু উইপোকার স্তর মিলেছে। এবং সেখানকার মাটিও ভিজে। বাঁচার জন্য যেমনটা উইপোকার প্রয়োজন।

০৮ ১২

উইপোকার এই তত্ত্বই এখনও পর্যন্ত অধিক স্বীকৃত। ২০১৩ সালে নরবার্ট জুয়েরগিনস নামে এক বিজ্ঞানীও গবেষণা করে উইপোকার তত্ত্বেই সিলমোহর দিয়েছেন।

০৯ ১২

তিনি দাবি করেন, স্যামোটারমিস অ্যালোসেরাস নামে এক প্রজাতির মরু উইপোকা প্রতিটা বৃত্তের মধ্যে মাটির গভীরে রয়েছে। যে বৃত্তগুলো নতুন, তার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে এই উইপোকা পাওয়া গিয়েছে। পুরনো বৃত্তের মধ্যেও এর প্রায় ৮০ শতাংশের মতো উইপোকার খোঁজ মিলেছে।

১০ ১২

তাঁর দাবি, এই মরু উইপোকা এই অংশের সমস্ত গাছপালা খেয়ে ফেলে তারপর মাটিতে গর্ত খুঁড়ে বসতি স্থাপন করে। শুষ্ক মরু অঞ্চলে নিজেদের বাসস্থানকে আর্দ্র রাখার এ একটা উপায়। তাদের করা গর্ত দিয়েই জল ভিতরে প্রবেশ করে মাটিকে আর্দ্র রাখে।

১১ ১২

দেখা গিয়েছে, বৃত্তের ভিতরে কোনও গাছপালা না থাকলেও, তার চারপাশে কিন্তু গাছ জন্মায়। এর কারণ হিসাবে ওই বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, মাটির নীচে উইপোকা যে জল জমিয়ে রাখে, সেই জলকে কাজে লাগিয়েই বৃত্তের চারপাশে গাছপালা গজিয়ে ওঠে। পরবর্তীকালে এই গাছগুলোকেও উইপোকা খেয়ে ফেলে এবং বৃত্তের আকার বাড়িয়ে চলে।

১২ ১২

এখনও বৃত্তের রহস্য নিয়ে সব বিজ্ঞানী একমত হতে পারেননি। সমান্তরাল ভাবে প্রচুর গবেষণা চলছে এই নিয়ে। গবেষণা নিয়ে অবশ্য স্থানীয় মানুষের কোনও মাথাব্যথা নেই। তাঁদের কাছে এটা ঈশ্বরের পায়ের ছাপ। যা দেখতে পর্যটকেরা ভিড় জমান এখানে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement