রূপকথার গল্পের মতো এবং বহু আধুনিক সিনেমায় প্রায়শই আমরা দেখি কোনও শহর জলের তলা থেকে উঠে এল এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেটি আবার তাঁর পূর্ব স্থানে চলে যায়। এই ধরনের ঘটনা যে শুধু সিনেমাতে ঘটে থাকে তা নয়। বাস্তবেও এরকম ভাবে বহু শহর জলের তলায় তলিয়ে যায়। সে রকমই একটি শহর হল আটলান্টিস যার ব্যাপারে আমরা গল্পে পড়েছি।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে বেশ কিছু শহর, সভ্যতা বিলুপ্ত। সেই রকমই একটি শহর বা সভতার মধ্যে অন্যতম হল আটলান্টিস।হারিয়ে যাওয়া শহর, যার ব্যাপারে শুধু আমরা শুনে এসেছি। কিন্তু কোথায় ছিল, কী রকম ছিল সেই শহর তাঁর কোনও প্রমাণ নেই। অজানা সেই শহরের বিষয়ে কিছু তথ্য দেখে নেওয়া যাক।
পৃথিবীর বুকে বেশ কিছু রহস্য আছে যার আজ পর্যন্ত কোনও রকম উত্তর মেলেনি। মানব জাতির উন্নতির পর বেশ কিছু সভ্যতার উন্মেষ হয় যার ব্যাপারে আমরা ইতিহাসে পড়ে এসেছি। তাদের মধ্যে এমন কিছু সভ্যতা বা শহর আছে যার ব্যাপারে আমরা শুনলেও স্বপক্ষে প্রমাণ কিছুই মেলেনি। তাদের মধ্যে অন্যতম হল আটলান্টিসের হারিয়ে যাওয়া শহর।
আটলান্টিসের হারিয়ে যাওয়া শহর পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো এবং রহস্যজনক শহরগুলির মধ্যে অন্যতম। প্রাচীনকাল থেকেই গবেষকরা এই শহর কোথায় অবস্থিত ছিল এবং কিভাবে তা ধ্বংসের পথে চলে যায় তা জানার চেষ্টা করে এসেছে। অনেকের মতেই বড় কোনও ভূমিকম্প বা সুনামির কারণে এই শহর ধ্বংসের পথে চলে যায়।
বিভিন্ন বই এবং কিছু টেলিভিশন শোতে এই হারিয়ে যাওয়া শহরের লোকেশনের কথা বলা হয়েছে। কয়েকজনের মতে গুগলে সার্চ করলে গ্রিসের সান্তোরিনি শহরকে আটলান্টিস বলা হয়ে থাকে আবার অনেকের মতে বিমিনির জলের নিচেই এই হারিয়ে যাওয়া শহরের রাস্তা লুকিয়ে রয়েছে। গ্রিক দার্শনিক প্লেটোর লেখনীতে এই শহরের ব্যাপারে বেশ কিছু অজানা তথ্য উঠে আসে।
গ্রিক দার্শনিক প্লেটোর লেখনী অনুযায়ী, আটলান্টিস শহরটি জিব্রাল্টারের বড় পাথরের কাছাকাছি অবস্থিত একটি দ্বীপ ছিল, যাকে হারকিউলিসের স্তম্ভ বলা হত।"
বহু মানুষের মতে অ্যাটলান্টিস নামটি আটলান্টিক মহাসাগরের নাম থেকে এসেছে। কিন্তু প্লেটোর লেখনী অনুযায়ী, গ্রিসের সমুদ্রের ভগবান পোসাইডনের প্রথম সন্তান অ্যাটলাসের নাম থেকে এই শহরের নামকরণ করা হয়।
প্লেটো আটলান্টিসের উপর দুটি বই লিখেছিলেন যার মধ্যে টিমেয়াসের পুরো বইটি থাকলেও, ক্রিটিয়াসের পুরো কপি পাওয়া যায়নি। ফলে এই শহরের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য অজানা রয়ে গিয়েছে। যদিও বলা হয়ে থাকে প্লেটো আটলান্টিসের উপর আরও একটি বই লিখেছিলেন যার নাম হের্মোক্রেতস।
বেশ কিছু নথিপত্র থেকে ধরা হয় যে আটলান্টিস শহরটি ১১হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো।
আটলান্টিস শহরটি একটি দ্বীপ থেকে শাসিত সাম্রাজ্য ছিল, যা বর্তমান যুগে ইউরোপের টাস্কানি শহর থেকে আফ্রিকার মিশর শহর পর্যন্ত তাদের সাম্রাজ্য সম্প্রসারিত করেছিল।
বলা হয়ে থাকে এই শহরটিতে সুন্দর নাগরিকের পাশাপাশি, একটি পোসেইডনের মন্দির এবং কঙ্ক্রিটের প্রাচীরের পাশাপাশি জল যাতায়াতের জন্য খালের সুব্যাবস্থা ছিল।
যদিও এই শহরটি আসলেই কিরকম ছিল এবং কিভাবে তা ধ্বংসের পথে এগিয়ে গেলো তা নিয়ে বরাবর আমাদের মনে বিস্ময় থেকেই যায়।