গাড়ির জামা। তা-ও আবার পশম দিয়ে তৈরি।
আমেরিকার টিভি ব্যক্তিত্ব কিম কার্দাশিয়ান বরাবরই পোশাক নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করতে ভালবাসেন। তবে এ বার তিনি নিজের গাড়িকেও পোশাক পরিয়েছেন।
কিছুদিন আগেই কিম নিজেকে একটি ‘সুপারকার’ উপহার দিয়েছেন। ইতালির সংস্থা ল্যাম্বরঘিনির তৈরি ওই সুপার স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্ল বা এসইউভি-র নাম ‘উরুস’।
ঝকঝকে কালো রঙের গাড়ি। ক্ষিপ্র গতি আর অন্য সুযোগসুবিধার জন্যই ‘সুপারকার’ গোত্রীয়। সেই গাড়িকেই ধবধবে সাদা পশমে মুড়ে দিয়েছেন কিম।
গাড়ির আসন থেকে শুরু করে স্টিয়ারিং— সব কিছুরই গায়ে চেপেছে পশমের জামা। এমনকি, গাড়ির চাকাকেও পশমের পোশাক পরিয়েছেন কিম।
বিশ্বের অন্যতম দামি গাড়িগুলির একটি ল্যাম্বরঘিনির ‘উরুস’। দাম ভারতীয় মূদ্রায় প্রায় চার কোটি টাকার কাছাকাছি।
দামি জিনিস সাধারণত একটু বেশি সাবধানে রাখা হয়। কিমের গাড়ির পশমের পোশাক কি সে জন্যই? ইনস্টাগ্রামে কিমের দেওয়া পশমে মোড়া গাড়ির ছবি দেখে সেই প্রশ্ন উঠেছিল।
দেখা গেল ব্যাপারটা আসলে তা নয়। নতুন গাড়ির প্রতি অতিরিক্ত আদর থেকে গাড়িকে জামা পরাননি কিম। গাড়ির পোশাকের মূল লক্ষ্য আসলে প্রচার।
সম্প্রতি অন্দর পোশাক, রাত পোশাক এবং বাড়িতে পরার আরামপ্রদ পোশাকে একটি নতুন ব্র্যান্ড বাজারে এনেছেন কিম। সেই ব্র্যান্ডের নাম দিয়েছেন ‘স্কিমস’। গাড়িকে আরামদায়ক পশমের পোশাক পরিয়ে সেই ব্র্যান্ডেরই প্রচার করেছেন কিম।
নিজেও একই ব্র্যান্ডের পোশাক পরে গাড়ির ভিতরে বসে ছবি তুলেছেন। নেটমাধ্যমে সেই সব ছবির পাশাপাশি গাড়ির পশমসজ্জার একটি ভিডিয়োও পোস্ট করেছেন তিনি।
বিবরণে কিম লিখেছেন, ‘কিমি একটা ছোট্ট ল্যাম্বো কিনেছে। আর নতুন ল্যাম্বো সেজেছে স্কিমসের আরামের পোশাকে। ব্যাপারটা বেশ মজাদার আর মিষ্টি, না?’
গাড়িকে পশমের পোশাকে সাজানোর ব্যাপারে অবশ্য কিম প্রথম নন। এর আগে পশমে সাজানো গাড়ি দেখা গিয়েছিল ‘ডাম্ব অ্যান্ড ডাম্বার’ নামে একটি সিনেমায়। ছবির দুই চরিত্র লয়েড এবং হ্যারির একটি ভ্যানকে সাজানো হয়েছিল পালকের সাজে।
নেটমাধ্যমে কিমের গাড়ির পশম-জামার প্রশংসা করে নেটাগরিকরা তুলনা টেনেছেন সিনেমার সেই গাড়ির সঙ্গে। তবে কিমের গাড়ির জামা দেখতে যতই ভাল লাগুক, নেটাগরিকদের অনেকের আশঙ্কা, তা যথেষ্ট টেকসই নয়।
কিমের গাড়ির গোত্র আলাদা। ল্যাম্বরঘিনির এই এসউভি সুপারকারে স্পোর্টস কারের সব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। মাত্র ৩.৬ সেকেন্ডে ০ থেকে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে পৌঁছতে পারে এর গতিবেগ। সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩০৫ কিলোমিটার। দ্রুতগতিতে রাস্তায় চললে এই পোশাক বেশিক্ষণ থাকবে কি, প্রশ্ন করেছেন বহু নেটাগরিক।
সুপারকারের দুনিয়ায় অবশ্য কিমের ল্যাম্বরঘিনি রয়েছে আট নম্বরে। এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে দামি সুপারকার হল পাগানি জোন্ডার এইচপি বারসেট্টা। ওই গাড়ির দাম ১ কোটি ৭৫ লক্ষ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মূদ্রায় ১২৮ কোটির কিছু বেশি।
দামি গাড়ির তালিকায় এখন দ্বিতীয় স্থানে বিলাসবহুল গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা রোলস রয়েসের ‘সোয়েপটেল’। এই গাড়ির দাম ৯৪ কোটি টাকার কাছাকাছি। গাড়িটি তৈরি করতে ৪ বছর সময় লেগেছিল রোলস রয়েস সংস্থার। ২০১৭ সালে এই গাড়িটিই ছিল বিশ্বের এক নম্বর দামি গাড়ি।
৯১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা দাম বুগাটির ‘লা ভয়চুর নইরে’-র। ফরাসি এই গাড়ি তৈরির সংস্থার গাড়ির ইঞ্জিন ১,১০২ কিলোওয়াট শক্তি উৎপাদন করতে পারে।
চতুর্থ স্থানটিও বুগাটির-ই দখলে। এদের ‘সেন্টোডিসেই’ মডেলের গাড়িটির দাম ভারতীয় মূদ্রায় প্রায় ৬৬ কোটি টাকা। গাড়িটি তার বিরল ধাঁচের নকশার জন্য জনপ্রিয়।
মার্সিডিড বেঞ্জ ২০০৪ সালে বাজারে এনেছিল তাদের নতুন মডেল মে ব্যাচ ‘এক্সেলেরো’। প্রতি ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারা এই গাড়ির দাম প্রায় ৫৯ কোটি টাকা।
দামি সুপারকারের তালিকায় অষ্টম স্থানে ৩২ কোটি টাকার ল্যাম্বরঘিনির ‘ভেনেনো’। এই গাড়িটি ৩ সেকেন্ডেরও কম সময়ে ০ থেকে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারে তুলতে পারে গতিবেগ।