পানমুনজমে দুই রাষ্ট্রপ্রধান। ছবি: এএফপি।
অহি-নকুল সম্পর্ক বললেও বোধহয় কম হয়ে যায়। কিন্তু শুক্রবার যেন সব উধাও। যাবতীয় তিক্ততা সরিয়ে হাসিমুখে করমর্দন করলেন দুই কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান। হল বহু প্রতিক্ষিত বৈঠক। দুই কোরিয়ার সীমান্তে যৌথ অসামরিক এলাকা বলে পরিচিত পানমুনজমে উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসেডেন্ট মুন জায়ে ইনের এই বৈঠক যে দুই প্রতিবেশীর শীতল সম্পর্কে কতটা বদল আনবে, তা এখনই বলা শক্ত। তবে একে ঐতিহাসিক ঘটনা বলে ইতিমধ্যেই ব্যাখ্যা করতে শুরু করছে রাজনৈতিক মহল।
দীর্ঘ যুদ্ধের শেষে ১৯৫৩ সালে পানমুনজমের এই অসামরিক এলাকাতেই সংঘর্ষ বিরতি চুক্তিতে সই করেছিল দুই কোরিয়া। দু’দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা শেষ বার আলোচনার টেবিলে বসেছিলেন ২০০৭ সালে। কিন্তু কিম ক্ষমতায় আসতেই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে বাক্যালাপ বন্ধ হয়ে যায়। চড়তে থাকে উত্তেজনার পারদ। শুক্রবার পানমুনজমে কিম জং উনকে দেখে মুন বলেছেন, ‘‘আপনাকে দেখে ভাল লাগছে। দুই কোরিয়ার শান্তিকামী মানুষকে বড়সড় একটা উপহার দিতে আমাদের চেষ্টা করতেই হবে।’’ জবাবেকিমও হাসিমুখে বলেন, “নতুন করে শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে আমি এখানে এসেছি। ইতিহাসের শুরু হল।’’ দেখলে কে বলবে, মাস খানেক আগে পর্যন্ত একে অন্যের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে গরমা গরম বিবৃতি দিয়েছে দু’পক্ষই।
২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে কমকরে ৮৯টা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে গোটা বিশ্বের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছিলেন কিম জং উন। হুমকি দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়া এমনকী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও। কিন্তু এখন যে সময় বদলেছে, তা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক। তাঁর কথায়, ‘‘ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে আমি আলোচনা চালাতে চাই।’’
দুই প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এসেছে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়টিও। সামনেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কিমের বৈঠকে বসার কথা। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে যে তিনি রাজি, সে কথা কিম আগেও জানিয়েছেন। ‘নতুন করে শুরু করার’ কথা বলে এ দিনও তিনি তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন। দুই কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন দেশ।