ধৃত সালহি। এএফপি-র তোলা ছবি।
খুন করে মালিকের মাথা কেটেছিল সে। আর সেই কাটা মুন্ডুর সঙ্গে নিজস্বী তোলাই কাল হল ইয়াসিন সালহির জন্য।
গত শুক্রবার দক্ষিণ পূর্ব ফ্রান্সের লিওঁর কাছে এক গ্যাস কারখানায় হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল সালহিকে। একই দিনে কারখানা চত্বর থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক ব্যক্তির কাটা মুন্ডু। অভিযুক্ত যে সংস্থায় গাড়ি চালকের চাকরি করত, কাটা মুন্ডুটি সেই সংস্থার মালিকের বলেই মনে করা হচ্ছে। ফলে হামলার পাশাপাশি ওই খুনের পিছনেও তার হাত রয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ ওঠে বছর পঁয়ত্রিশের সালহির বিরুদ্ধে।
খুনের অভিযোগে ধরা পড়ার পরে প্রায় দু’দিন মুখে কুলুপ এঁটেছিল সালহি। দীর্ঘ জেরা সত্ত্বেও নিজের অপরাধ স্বীকার করেনি সে। কিন্তু ফরাসি পুলিশ তদন্ত শুরু করে জানতে পারে, ওই কাটা মুন্ডুটির সঙ্গে নিজস্বী তুলেছিল সালহি। নিজেকেই সেই ছবি পাঠিয়েছিল সে। আর কানাডার একটি নম্বরে ফরওয়ার্ড করা হয়েছিল সেই ছবি। এই তথ্য পুলিশের হাতে আসার পরই নাকি পুলিশের কাছে নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে সালহি। কাকে সে ওই ছবি পাঠিয়েছিল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পুলিশ। তবে খুনটা যে সালহিই করেছে সে বিষয়ে একরকম নিশ্চিত তারা।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম হার্ভে কোরনারা। কর্মসূত্রে ওই কারখানায় যাতায়াত ছিল বছর চুয়ান্নর হার্ভের। ধৃত সালহিও ওই কারখানায় নিয়মিত যেত। পুলিশ সূত্রে খবর, ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএসের অনুরাগী ছিল সালহি। আর সে জন্য আইএসের অনুকরণেই নিজের মালিকের মাথা কেটেছিল সে। হার্ভেকে খুন করার পরে তাঁর মাথাটি কাটা হয়েছিল, নাকি জীবন্ত অবস্থায় তাঁর মুণ্ডচ্ছেদ করা হয়, তা প্রাথমিক ময়না-তদন্তে জানা যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে সালহিকে খুব শিগগির প্যারিস আনা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
অন্য দিকে, তিউনিসিয়ায় ফের জঙ্গি হামলা হতে পারে বলে আজ একটি সতর্কবার্তা জারি করেছে ব্রিটিশ সরকার। গত শুক্রবার তিউনিসিয়ার সৈকত শহর সুসেতে বন্দুকবাজের হামলায় মৃত্যু হয় ৩৯ জনের। যাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই বিদেশি পর্যটক। ক্যামেরন সরকার জানিয়েছে, ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে ১৫ জন ব্রিটেনের নাগরিক ছিলেন। আজ ব্রিটিশ বিদেশ মন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত এক নির্দেশাবলিতে বলা হয়েছে, যাঁরা এখনও ও দেশে রয়েছেন, তাঁদের খুব সতর্ক থাকতে হবে। অপরিচিত কোনও ব্যক্তির আচরণ সন্দেহজনক ঠেকলে দ্রুত যাতে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, সে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে সুসের হোটেল বা রিসর্টে জঙ্গিরা ফের বড় ধরনের নাশকতা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা ক্যামেরন সরকারের।