সপ্তাহ খানেক আগে আশার যে ক্ষীণ আলো দেখা গিয়েছিল, একটা ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পরে সেটাও নিভে গেল। নাইজেরিয়ার অপহৃত স্কুলছাত্রীদের ফেরত দেওয়ার প্রশ্নই নেই বলে জানিয়ে দিল ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী বোকো হারাম। সেই সঙ্গে এটাও তারা জানিয়ে দিয়েছে যে সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষ-বিরতি নিয়ে কোনও আলোচনায় আসতে রাজি নয় তারা।
কাল গভীর রাতে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে বোকো হারাম। বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার দফতরে ওই ভিডিও পাঠিয়েও দিয়েছে তারা। সেই ভিডিওয় আবুবকর শেকাউ নামে এক ব্যক্তি নিজেকে ওই গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচয় দিয়ে জানিয়েছে, অপহৃত স্কুলছাত্রীদের প্রত্যেককেই বিয়ে করেছে নিয়েছে সে। ধর্মান্তরিতও করা হয়েছে সকলকে। ফলে তাদের ফেরত দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। বেশ হাসতে হাসতেই আবুবকর বলেছে, “ছাত্রীদের বিষয়টি তো অনেক আগেই ভুলে যাওয়ার কথা। ওদের আমি বিয়ে করে ফেলেছি।” কিছু ছাত্রীকে সীমান্ত পেরিয়ে ক্যামেরুন আর চাদেও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে আবুবকর।
এ বছর এপ্রিল মাসে উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ার চিবকের একটি বোর্ডিং স্কুল থেকে ২৭৬ জন ছাত্রীকে অপহরণ করেছিল বোকো হারাম। মাস খানেক পরে কিছু ছাত্রী পালিয়ে এসেছিল। কিন্তু ২১৯ জন কিশোরী তখন থেকেই বোকো হারামের হাতে বন্দি।
গত ১৭ অক্টোবর নাইজেরীয় সরকার দাবি করে, বন্দি জঙ্গিদের মুক্তির বিনিময়ে অপহৃত কিশোরীদের ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে বোকো হারাম। প্রতিরক্ষা দফতরের প্রধান মার্শাল অ্যালেক্স বাদেহ্ তখন ঘোষণা করেছিলেন, খুব শিগগির সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি মেনে চলবে বোকো হারাম। কিন্তু সাম্প্রতিক ভিডিওয় বোকো হারাম নেতা বলেই দিয়েছেন, “এটা যুদ্ধ। আর যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে ফিরে আসা যায় না।” তবে নিজেদের কথা মতোই কাজ করছে ওই জঙ্গি গোষ্ঠী। গত সপ্তাহ থেকেই নাইজেরিয়ায় বেড়ে গিয়েছে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ। গত সপ্তাহেই মুবি নামে একটি শহর পুরোপুরি দখল করে নিয়েছে তারা। আবুবকর নিজেও দাবি করেছে, উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়া থেকে এক জার্মান নাগরিককে আটক করে রেখেছে তারা। তবে আটক ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা। ফলে জঙ্গি কার্যকলাপ রোধে নাইজেরীয় সরকারের ভূমিকা নিয়েও ফের প্রশ্ন উঠেছে।