বিশ্বে সামরিক অস্ত্রের ইতিহাসে নবতম সংযোজন ড্রোন। এমন কিছু ড্রোন আছে যা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। আবার কিছু ড্রোন নিজেই ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে কাজ করে।
নিজেই ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে কাজ করা এই ড্রোনগুলিকে ‘কামিকাজে’ বা আত্মঘাতী ড্রোন বলা হয়।
কিভ-ক্রেমলিন সঙ্ঘাতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহায়তা করার জন্য আমেরিকা সম্প্রতি এই আত্মঘাতী ড্রোনগুলি ইউক্রেনকে সরবরাহ করেছে।
এই ড্রোনগুলিকে ‘সুইচব্লেড ড্রোন’ও বলা হয়। এই বিমানগুলি ছোট মানববিহীন বিমান যা বিস্ফোরকে পরিপূর্ণ থাকে।
উড়ান শুরু করার সময় এদের ডানাগুলি ব্লেডের মতো বেরিয়ে আসে বলে এগুলিকে ‘সুইচব্লেড ড্রোন’ বলা হয়।
লক্ষ্যবস্তুকে সরাসরি আঘাত হানতে সক্ষম এই আত্মঘাতী ‘কামিকাজে ড্রোন’।
একটি ট্যাঙ্ক মুহূর্তে গুঁড়িয়ে দিতে বা শত্রু সেনাবাহিনীর একটি দল নিমিষের মধ্যে খতম করতে সক্ষম এই ড্রোন।
এক বারই ব্যবহারযোগ্য এই ড্রোনগুলি আমেরিকার অন্য ড্রোনগুলির তুলনায় অনেকটাই সস্তা।
এরোভায়রনমেন্ট সংস্থা এই ‘কামিকাজে ড্রোন’-এর প্রস্তুতকারক। এই ড্রোনটি মূলত দু’টি আকারে পাওয়া যায়। সুইচব্লেড ৩০০ এবং সুইচব্লেড ৬০০।
সুইচব্লেড ৩০০-র ওজন প্রায় পাঁচ পাউন্ড (প্রায় আড়াই কিলোগ্রাম)। অপেক্ষাকৃত হালকা ড্রোনটি টানা ১৫ মিনিট পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে। যাতে একটি পিঠের ব্যাগের মধ্যে বহন করা যায়, তা মাথায় রেখেই এই ড্রোন তৈরি করা হয়েছে।
শত্রুপক্ষের গতিবিধির উপর নজর রাখতে ছোট পদাতিক সেনাদলকে সাহায্য করে এই ড্রোন।
সুইচব্লেড ৬০০ ড্রোনটি তুলনামূলকভাবে আকার এবং ওজনে বড়। এই ড্রোনের ওজন প্রায় ৫০ পাউন্ড (প্রায় সাড়ে ২২ কিলো)। এই ড্রোনগুলি টানা ৪০ মিনিট পর্যন্ত উড়তে পারে। এটি ‘ভ্রাম্যমাণ মিসাইল’ হিসেবেও পরিচিত। প্রধানত শত্রুপক্ষের কামান ধ্বংস করতে এই মিসাইলের জুড়ি মেলা ভার।
ছোট প্রাণঘাতী এই ড্রোনগুলি রাডারে শনাক্ত করা কঠিন। মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে।
২০১০ সালে আফগানিস্তান যুদ্ধের সময় তালিবানের বিরুদ্ধে আমেরিকার সামরিক সেনা ‘কামিকাজে ড্রোন’ ব্যবহার করে। আমেরিকার সেনামহলে এই ড্রোন ‘ফ্লাইং শটগান’ হিসেবেও পরিচিত।
শুধু মাত্র নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করাই এই ড্রোনের বিশেষ বৈশিষ্ট। অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্রের মতো ‘কামিকাজে’ আশপাশের এলাকা বা মানুষের ক্ষতি করে না। এমনকি লক্ষ্যবস্তুর একদম পাশে বসে থাকলেও সেই মানুষের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হবে অতি সামান্য।
আমেরিকা ছাড়াও রাশিয়া, চিন, ইসরায়েল, ইরান এবং তুরস্কের কাছেও এই ধরনের ড্রোন রয়েছে।