আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সাংবাদিক জামাল খাশোগি, সৌদি আরবের রাজপুত্র মহম্মদ বিন সলমন
সৌদি আরবের রাজপুত্র মহম্মদ বিন সলমনের বিরুদ্ধে এই প্রথম প্রকাশ্যে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে খুন করার অভিযোগ আনল আমেরিকা। সলমনের নির্দেশেই খাশোগিকে খুন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা। যদিও আমেরিকার তোলা এই অভিযোগকে ফের নস্যাৎ করেছে সৌদি প্রশাসন।
২০১৮-র ২ অক্টোবরে সৌদিতে খুন হন খাশোগি। তার পর দু’বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে তদন্ত চলছে। খাশোগি যখন খুন হন, তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু সেই হত্যার তদন্ত চললেও, হত্যার নেপথ্যে কে, তা প্রকাশ্যে আনা হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে খাশোগির হত্যা রহস্যই থেকে গিয়েছিল। যদিও বিভিন্ন সূত্র থেকে এই খুনে আঙুল উঠেছিল সৌদি রাজপুত্রের বিরুদ্ধেই। কিন্তু তা ‘ধামাচাপা’ পড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সৌদির সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক মধুর। তাঁদের অনুমান, সেই কারণেই ট্রাম্প চাননি বিষয়টা নিয়ে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি হোক।
তবে সৌদির সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক ‘ভাল’ হলেও খাসোগি হত্যার জন্য তিনি যে চুপ করে বসে থাকবেন না, ক্ষমতায় আসার পর সেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যে সাহস ট্রাম্প দেখাতে পারেননি বা দেখাতে চাননি, বাইডেন কিন্তু তা করে দেখালেন। শুধু তাই নয়, জানিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের ভিত্তিতেই সৌদি রাজপুত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তিনি। এবং প্রকাশ্যে এই প্রথম।
শুধু অভিযোগ তোলাই নয়, এই হত্যার তীব্র নিন্দা করে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৭৬ জন সৌদি নাগরিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ভিসাতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। এ ক্ষেত্রে সৌদি রাজপুত্রকে ছাড় দিলেও কড়া বার্তা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। তবে এর জেরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যাতে প্রভাব না পড়ে সে দিকটাও খেয়াল রেখেছে আমেরিকা। বাইডেন প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, “সম্পর্কের কথা মাথায় রেখেই শুধু কড়া বার্তা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে সৌদিকে। এই দেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। তাতে যেন ছেদ না পড়ে এ বিষয়টাও যেমন দেখা হয়েছে, তেমনই অন্যায়কে যে আমেরিকা বরদাস্ত করবে না, সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে সৌদিকে।”
দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট-এ কাজ করতেন খাসোগি। আমেরিকায় থাকতেন। সৌদি রাজপুত্রের সমালোচক ছিলেন তিনি। ২রা অক্টোবর ২০১৮ সালে তিনি ইস্তানবুলে সৌদি আরবের কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন কিছু নথি নেওয়ার জন্য। কিন্তু তাঁকে সেখান থেকে বেরোতে দেখা যায়নি। পরবর্তী কালে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়, তাঁকে কনস্যুলেটের ভেতর হত্যা করা হয়েছে।