—ফাইল চিত্র।
সরকারি অফিস-কাছারিতে নির্দেশ তিনি দিতেই পারেন। কিন্তু আট থেকে আশি তামাম দেশবাসীর কাছে সেই একই বার্তা পৌঁছে দিতে অনুরোধের পথ ধরলেন ভাবী আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউসে আসার প্রথম দিন থেকেই করোনা-যুদ্ধে নামার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এ বার ওই একই দিন থেকে শুরু করে তিনি ‘১০০ দিনের কাজ’ দিলেন দেশের সব নাগরিককে। আর্জি রাখলেন— ‘‘দয়া করে মাস্ক পরুন। মাস্ক ছাড়া বাইরে পা রাখবেন না। সারা জীবন পরতে বলছি না। মাত্র এই একশোটা দিন।’’
আর এ যে নিছক ‘মাস্ক-রাজনীতি’ নয়, বরং করোনা-যুদ্ধে তিনি যে সব অস্ত্রই প্রস্তুত রাখতে চাইছেন তা-ও জানান বাইডেন। কাল একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারেই তিনি বলেন, ‘‘দেশের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউচিকে আমি আমার নতুন করোনা টিমে রাখতে চাইছি। পাশাপাশি, আমার প্রশাসনের চিফ মেডিক্যাল অ্যাডভাইসর পদে থাকারও আর্জি জানিয়েছি তাঁকে। নতুন প্রশাসন এলেও তিনি যেন তাঁর নিজের মতোই কাজ করে যান, সেটাই চাইছি।’’
লাগাতার বিবাদের জেরে এই ফাউচিকেই ভোটের পরে ছেঁটে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাইডেন কিন্তু তাঁর প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখেই বলেন, ‘‘ফাউচি যে দিন কোনও ভ্যাকসিনকে নিরাপদ বলে সবুজ সঙ্কেত দেবেন, তখনই আমি জনসমক্ষে সেই ঘোষণা করব।’’ ভ্যাকসিনের প্রতি মানুষের আস্থা গড়ে তুলতে নিজে স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশও করেন তিনি।
ফাইজ়ার-বায়োএনটেকের সম্ভাব্য করোনা-টিকা ইতিমধ্যেই ছাড়পত্র পেয়েছে ব্রিটেনে। তাদের স্পটুনিক-ভি ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট নিয়ে তৎপর রাশিয়াও। শোনা যাচ্ছে আমেরিকার ওষুধ কোম্পানি মডার্নাও তাদের টিকার ছাড়পত্র আদায়ে আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে কাছে আবেদন করেছে। বাইডেনের মতে অবশ্য টিকা এলেও মাস্ক পরাটা জরুরি। না-হলে ফের যে ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে দেশে, তা কিছুতেই সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না।
কালকের সাক্ষাৎকারে বাইডেন জানান, ক্ষমতায় আসার পর-পরই দেশের সব ফেডারেল অফিসে কর্মী-আধিকারিকদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে চলেছেন তিনি। তাঁর পূর্বসুরি ডোনাল্ড ট্রাম্প বরাবরই মাস্ক পরায় অনীহা দেখিয়েছেন। এমনকি নিজে সংক্রমিত হওয়ার আগে পর্যন্ত করোনাকে বিশেষ পাত্তাও দেননি তিনি। বাইডেনের ‘মাস্ক-প্রীতি’ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বহু বার। বাইডেন তবু বরাবর তাঁর উল্টো পথেই হেঁটেছেন। প্রচারের সময় থেকেই মাস্ক পরা-সহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পক্ষে তিনি। এ বার প্রেসিডেন্ট হিসেবেও তিনি যে দেশবাসীর সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান, সে কথাও জানান বাইডেন। তাঁর দাবি, তাঁকে কিংবা ভাবী ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে কখনওই মাস্ক ছাড়া বাইরে দেখা যাবে না। এমনকি প্রেসিডেন্ট দফতরেও বাইডেন মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দেবেন বলে হোয়াইট হাউস সূত্রের খবর।