Joe Biden

Joe Biden: আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবি জোরদার, সরব বাইডেন

আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে কাজ করা আমেরিকার একটি সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ২০০৯ সাল থেকে ২৭৪টি বন্দুকবাজির ঘটনা ঘটেছে, মারা গিয়েছেন ১৫৩৬ জন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২২ ০৫:২৪
Share:

কান্নায় ভেঙে পড়েছে এক পড়ুয়া। টেক্সাসের উভালডে। ছবি: রয়টার্স

চলতি বছরেই নয় নম্বর। মঙ্গলবার টেক্সাসের স্কুলে গুলিচালনার ঘটনাকে ধরে এ বছর এখনও অবধি আমেরিকায় ৯ বার বন্দুকবাজির ঘটনা ঘটে গেল। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শোকার্ত স্বরে বলছেন, ‘‘ঈশ্বরের নাম নিয়ে বলুন, আর কবে আমরা নড়ে বসব? জাতি হিসেবে আমাদের নিজেদেরই প্রশ্ন করতে হবে, কবে আমরা বন্দুক লবির মোকাবিলা করব?’’

Advertisement

আমেরিকার বন্দুক-লবি, অর্থাৎ যাঁরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিরোধী। টেক্সাসের ঘটনা আরও একবার আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নটি আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এল। এর আগেও ডেমোক্র্যাট শিবির অনেক বার আইন সংস্কারের দাবি তুলেছে। কিন্তু বন্দুক-লবির চাপে পিছিয়ে আসতে হয়েছে। রিপাবলিকানদের একটা বড় অংশের সমর্থন বন্দুক লবির সঙ্গে রয়েছে। তাদের যুক্তি, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির নিরাপত্তার অধিকারের সঙ্গেই আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অধিকারের প্রশ্নটি জড়িত। সুতরাং সেখানে কোনও রকম নিয়ন্ত্রণ এনে ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং ব্যক্তিসুরক্ষায় হাত দেওয়া যাবে না।

অন্য দিকে, বিরুদ্ধ পক্ষের যুক্তি হল, অবাধে আগ্নেয়াস্ত্র বিকিকিনি হতে থাকলে ব্যক্তি নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে গণ নিরাপত্তাকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়। আমেরিকায় পরপর গুলিচালনার ঘটনায় তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে কাজ করা আমেরিকার একটি সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ২০০৯ সাল থেকে সে দেশে ২৭৪টি বন্দুকবাজির ঘটনা ঘটেছে, মারা গিয়েছেন ১৫৩৬ জন। আমেরিকার এই বন্দুকবাজদের অনেকেই মানসিক ভাবে সুস্থ নন বলেও দেখা গিয়েছে।

Advertisement

তবে মানসিক অসুস্থতা বন্দুক নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা বাড়ায় বই কমায় না বলে দাবি করে কানেটিকাটের ডেমোক্র্যাট সেনেটর ক্রিস মারফি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলছেন, ‘‘দয়া করে মানসিক অসুস্থতার কথাগুলো তুলবেন না। পৃথিবীর মধ্যে আমেরিকা একমাত্র দেশ নয়, যেখানে মানসিক ভাবে অসুস্থ ব্যক্তিরা রয়েছেন। বরং পৃথিবীর মধ্যে আমেরিকা একমাত্র দেশ যেখানে এমন অবাধে ঢালাও আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়ার সুযোগ রয়েছে, যে কোনও অপরাধী, যে কোনও অসুস্থ-বিকৃত ব্যক্তি এখানে আগ্নেয়াস্ত্রের নাগাল পায়। তফাৎটা এইখানে।’’

প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জমানায় গুলি চলেছিল কানেটিকাটের স্যান্ডি হুক বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে। সেই ঘটনা মনে করিয়ে ওবামা বলেছেন, ‘‘স্যান্ডি হুকের ১০ বছর আর বাফেলোর (সুপারমার্কেটে গুলিচালনা) ১০ দিন পর— আমাদের দেশ পঙ্গু হয়ে রয়েছে। ভয়ে নয়, বন্দুক লবি আর একটা রাজনৈতিক দলের জন্য, যারা এই ধরনের ট্র্যাজেডি রোখার ব্যাপারে কোনও সদিচ্ছা দেখায় না।’’

এ বার কি কোনও পরিবর্তন হবে? ইতিমধ্যে হাউসে পাশ হওয়া দু’টি বিল নিয়ে সেনেটে নড়াচড়া শুরু হয়েছে। তবে ভোটাভুটির দিন ঠিক হয়নি। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মতোই অবিলম্বে তৎপর হওয়ার কথা বলেছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক হয়েছে। এ বার সাহসী পদক্ষেপ করতেই হবে।’’ এশিয়া সফর শেষ করে দেশে ফিরেই খবরটা পান বাইডেন। সন্তান হারানোর শোক নিজের জীবনে পেয়েছেন তিনি। সেই ভারের কথা স্মরণ করিয়েই হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন তিনি। বলেন, ‘‘আমি যখন প্রেসিডেন্ট হই, ভেবেছিলাম, এমন কোনও ঘটনা যেন আমাকে দেখতে না হয়। কিন্তু তা তো হল না। এ বার অন্তত যেন আমরা আমাদের যন্ত্রণাকে উদ্যোগে পরিণত করতে পারি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement