Joe Biden

Joe Biden: ‘এড়ানো যেত না এই অরাজকতা’

এই মাসের মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাইডেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২১ ০৬:৫৫
Share:

ফাইল চিত্র।

আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য গোটা বিশ্ব তাঁর দিকে আঙুল তুলছে। কয়েক দিনের নীরবতা ভেঙে প্রথম মুখ খুলে জো বাইডেন জানিয়েছিলেন, সেখান থেকে সামরিক বাহিনী সরিয়ে কোনও ভুল করেনি তাঁর প্রশাসন। গত কাল একটি আমেরিকান নিউজ় চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে আরও এক বার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট। সেই সঙ্গেই জানিয়েছেন, গোটা আফগানিস্তানে এখন ঠিক যে অরাজক পরিস্থিতি চলছে, সেটা কোনও ভাবেই এড়ানো যেত না। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ যদি মনে করে থাকেন, এই অরাজকতা ছাড়াই আমাদের বাহিনী আফগানিস্তানের মাটি ছাড়তে পারত, আমি জানি না সেটা কী করে সম্ভব হত।’’

Advertisement

এই মাসের মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাইডেন। কিন্তু বর্তমানে সে দেশে আমেরিকার অনেক নাগরিক আটকে রয়েছেন। তাঁদের সকলকে সুরক্ষিত অবস্থায় দেশে ফেরত না-আনা পর্যন্ত আমেরিকান সেনা আফগানিস্তানের মাটি ছাড়বে না বলে জানিয়েছেন বাইডেন। তালিবান কাবুলের দখল নেওয়ার পরেই সেখানকার বিমানবন্দরে দখল নিয়েছে আমেরিকান সেনা। আফগান ও আমেরিকান নাগরিক মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৪৮০০ জনকে সেখান থেকে বার করে আনতে পেরেছে বাইডেন প্রশাসন। এখনও আমেরিকার অনেক নাগরিক দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। এখন ৫২০০ আমেরিকান সেনা আফগানিস্তানে আছে।

বাইডেনের কথায়, ‘‘আমেরিকান নাগরিকদের আপাতত আটকাচ্ছে না তালিবান। কিন্তু আফগানদের জন্য নানা বাধা সৃষ্টি করছে ওরা। প্রয়োজনে ৩১ অগস্টের পরেও আমাদের বাহিনী থাকবে সেখানে।’’ সাধারণ আফগান, যাঁরা সে দেশে আর থাকতে চান না, তাঁদের সুরক্ষা নিয়ে তাঁর প্রশাসন খুবই উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন বাইডেন। একই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে থাকা কারও নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা সম্ভব হচ্ছে না আমেরিকান বাহিনীর। তারা চেষ্টা করছে, যত দ্রুত সম্ভব আমেরিকার নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিজেরা ফিরে যেতে। বাইডেন প্রশাসনের হয়ে কাজ করা প্রচুর দোভাষী, নাগরিক অধিকার রক্ষাকর্মী এখন তালিবানের ভয়ে দেশ ছাড়তে চাইছেন। কিন্তু তাঁদের অনেকেই বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছতে পারছেন না বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

Advertisement

সাক্ষাৎকারে বাইডেন তালিবানের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, সাধারণ আফগান মানুষ বিশেষত নারীদের অধিকার যেন সুরক্ষিত থাকে। সেই সঙ্গেই তিনি বলেছেন, ‘‘শুধু মাত্র সামরিক বাহিনীর উপরে নির্ভর করে কোনও দেশে নারী অধিকার সুরক্ষিত রাখা যায় না। এর জন্য সেই সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের সদিচ্ছা থাকা প্রয়োজন।’’ সেই সঙ্গেই বাইডেন মনে করেন, তালিবানকে এখন স্থির করতে হবে ওরা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চায় কি না। যদিও তিনি বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় না ওদের মৌলিক বিশ্বাসগুলো এত দিনে পাল্টেছে।’’

আফগানিস্তান ফের তালিবানের দখলে চলে যাওয়ার পরে বাইডেন প্রশাসনের প্রতি মনোভাব পাল্টাচ্ছে দেশের মানুষের। একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দেশের দুই তৃতীয়াংশ মানুষই এখন মনে করছেন, আফগানিস্তানে আমেরিকার এই দীর্ঘতম যুদ্ধ কোনও কাজে আসেনি।

আমেরিকান বাহিনী প্রত্যাহার শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই তালিবানের হাতে তাদের বিপুল অস্ত্র ভান্ডার আসতে শুরু করেছিল। সাম্প্রতিক একটি ভাইরাল ভিডিয়োয় আমেরিকানদের সাঁজোয়া গাড়ি ও ব্ল্যাক হক কপ্টারে চড়ে উল্লাস করতে দেখা গিয়েছে তালিবান যোদ্ধাদের। যা দেখার পরে অস্বস্তিতে পেন্টাগন। রিপাবলিকান নেতারা বিষয়টি নিয়ে বাইডেনকে এক হাত নিয়েছেন। তাঁদেরই মধ্যে এক জন রনা ম্যাকড্যানিয়েল বলেছেন, ‘‘বাইডেন প্রশাসনকে ধন্যবাদ। এদের জন্যই তালিবান আজ এতটা শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement