‘বুড়ো হাড়ে বড্ড লাগে,’ জেল থেকে বেরিয়ে ফন্ডা

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সরকারি উদাসীনতার বিরুদ্ধে এবং নতুন এক সবুজ চুক্তির দাবিতে ওই লাল কোট পরেই ফি-শুক্রবার ক্যাপিটল সরকারি ভবন চত্বরে ধর্নায় বসছেন তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৩
Share:

অভিনেত্রী জেন ফন্ডা। —ছবি এএফপি।

হাড়হিম শুক্রবার। তবু সে দিন জেলে ঢুকেই নিজের লাল রঙের ‘বিখ্যাত’ লং কোটটা খুলে ফেলেছিলেন হলিউড অভিনেত্রী জেন ফন্ডা। ‘বুড়ো হাড়ে’ ঠান্ডা লাগছিল তাঁরও। তবু অবলীলায় কোটটা তিনি দিয়ে দিয়েছিলেন আর এক কয়েদিকে। কাল জেল থেকে বেরিয়েই ফন্ডা বললেন, ‘‘ঠান্ডায় কাঁপছিলেন উনি। তাই ধার দিয়েছিলাম। কিন্তু এ বার ফেরত চাইব। জেলে রাত কাটাতে হলে ওটাই যে আমার ম্যাট্রেস!’’

Advertisement

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সরকারি উদাসীনতার বিরুদ্ধে এবং নতুন এক সবুজ চুক্তির দাবিতে ওই লাল কোট পরেই ফি-শুক্রবার ক্যাপিটল সরকারি ভবন চত্বরে ধর্নায় বসছেন তিনি। এ জন্য এর আগেও তিন বার সেখান থেকে গ্রেফতার হয়েছেন ফন্ডা। তবে এ বার জেল থেকে বেরিয়ে একটু যেন কাতর শোনাল তাঁর গলা। বললেন, ‘‘শুক্রবার-শুক্রবার করে জেলে রাত কাটানোটা আর বোধ হয় আমার পক্ষে সম্ভব হবে না। আগে ওরা ধাতব হাতকড়া পরাত। এখন সব প্লাস্টিকের তৈরি। বিরাশি বছরের বুড়ো হাড়ে বড্ড লাগে ওতে। আর জেলের ভিতরটাও যেন বড্ড বেশি ঠান্ডা মনে হল এ বার।’’

সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গের লড়াইকে সামনে রেখেই জলবায়ু আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন অস্কারজয়ী ফন্ডা। বয়সের ভার সামলে এখনও বলছেন, ‘লড়াই চলবে।’ থুনবার্গকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশও করলেন তিনি। ১৯৭০-এ প্রথম বার জেলে যেতে হয়েছিল তাঁকে। অভিনেত্রীর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, সে বার মিথ্যে মাদক-পাচারের মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল তাঁকে। ক্লিভল্যান্ডের জেলে বাঁ হাত মুঠো করে দাঁড়িয়ে জেলেরই ক্যামেরাম্যানকে পোজ় দিচ্ছেন ফন্ডা— ছবিটা এখনও মুছে যায়নি তাঁর ভক্তদের স্মৃতি থেকে। তবু বিরাশিতেও কেন তাঁকে জেলে যেতে হবে, সে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।

Advertisement

ফন্ডা কিন্তু সটান। বলছেন, ঠান্ডা আর বয়সের কারণে শারীরিক কষ্ট ছাড়া জেলে রাত কাটাতে তেমন অসুবিধা হয়নি তাঁর। আর জেলের খাবার? ফন্ডার কথায়, ‘‘ভালই তো। যেমনটা ভেবেছিলাম, তার চেয়ে ঢের বেশি সুস্বাদু ছিল জেলের চিজ়-স্যান্ডউইচ। তবে জানি না, সব কয়েদিদের জন্যই ওই এক খাবার ছিল কি না!’’ সত্তরের আর এখনকার মার্কিন জেল কি একই রকম? এর উত্তরে একটু যেন থমকালেন ফন্ডা। বললেন, ‘‘আগে বলুন, এই এক রাতে বাইরে নতুন কিছু হল কী! প্রেসিডেন্টের ইমপিচমেন্টের ব্যাপারটা কিছু এগোল!’’ তার পরেই জুড়লেন— ‘‘আগে দেখতাম, জেলে সব সাদা-সাদা কয়েদি। এখন কালোয় ভরে গিয়েছে।’’ ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন, প্রয়োজনে প্রশাসনের ‘বর্ণবিদ্বেষমূলক নীতি’-র বিরুদ্ধেও সরব হতে তৈরি তিনি।

ফন্ডা নিজেকে তৈরি করছেন নেটফ্লিক্সের আসন্ন একটি সিরিজে অভিনয়ের জন্যও। তাঁর আর জেলযাত্রা যে ‘পোষাবে না’, এটাও তার একটা কারণ বলে জানালেন অভিনেত্রী। কালো লম্বা গাড়িতে চড়ে জেল চত্বর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের বললেন, ‘‘জেলের এক অফিসারই বললেন, ‘দয়া করে আর আসবেন না এখানে। বরং অন্য ভাবে নিজের দাবিতে প্রশাসনের মনোযোগ আদায়ের চেষ্টা করুন।’ দেখি কী করা যায়।’’ লাল কোট আর ফন্ডাকে তাই শুক্রবার ফের ক্যাপিটলে দেখা যাবে কি না, সেই জল্পনা উস্কে দিলেন অভিনেত্রী নিজেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement