উদ্ধারকাজ চলছে ইজ়রায়েলে। ছবি: রয়টার্স।
কয়েক দশক ধরে ইজ়ারায়েলে মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ করছেন আশদোদের বাসিন্দা ইয়োসি লানদাউ। বোমা-গুলির আঘাতে ছিন্নভিন্ন বহু মৃতদেহ তিনি এই কয়েক দশকে উদ্ধার করেছেন। কিন্তু ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্তাইনের সশস্ত্রবাহিনী হামাসের সংঘাত নৃশংসতার মাত্রা ছাড়িয়েছে বলেই মনে করছেন ইয়োসি।
সংবাদ সংস্থা এএফপির সঙ্গে কথা বলার সময় নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন ইয়োসি। তিনি জানিয়েছেন, প্রতি দিন সাইরেনের শব্দে তিনি জেগে ওঠেন। তার পরেই শুরু হয় মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ।
গাজ়া শহরের উত্তরে উপকূলীয় শহর আশদোদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যুদ্ধবিদ্ধস্ত এলাকাগুলিতে যান তিনি। এর পর সারা দিন ধরে চলে মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ। সেই অভিজ্ঞতাকে ভয়ঙ্কর বললেও কম বলা হবে, এমনটাই মন্তব্য করেছেন ইয়োসি।
ইয়োসির কথায়, ‘‘আমি গাড়ি উল্টে পড়ে থাকতে দেখেছি। রাস্তায় কত মানুষের দেহ পড়ে থাকতে দেখেছি। সেই দৃশ্য ভয়ঙ্কর। সীমান্তের কাছাকাছি সেডেরো শহরে অনেক সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন।’’
৫৫ বছর বয়সি ইয়োসি জানিয়েছেন, হামাস এবং ইজ়রায়েলি বাহিনীর মধ্যে সংঘাতে তিনি যা ভয়াবহতা দেখেছেন, তা আগে কখনও দেখেননি। তাঁর কথায়, ‘‘একটা রাস্তায় এত মৃতদেহ পড়েছিল যে, ১৫ মিনিটের রাস্তা অতিক্রম করতে ১১ ঘণ্টা লেগেছিল।’’
তবে ইয়োসিকে সব থেকে বেশি নাড়া দিয়েছে এক মহিলার দেহ। ইয়োসি জানান, একটি বাড়িতে প্রবেশ করে তিনি ওই দেহ দেখতে পান। তিনি বলেন, ‘‘ছুরি দিয়ে মহিলার পেট ফালা ফালা করে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে একটি শিশুও ছিল। মায়ের নাড়ির সঙ্গে তখনও যুক্ত ছিল শিশুটি। দৃশ্য দেখে আমি ঠিক থাকতে পারিনি।’’
এই সংঘাতের আবহে অনেক মহিলাকে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে বলেও দাবি ইয়োসির।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র বাহিনী হামাসের সংঘাত সপ্তম দিনে পা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ, সংঘর্ষের ষষ্ঠ দিনে ইজ়রায়েলি সেনা জানিয়েছে, প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র বাহিনী হামাসের সঙ্গে সংঘাতে এখন পর্যন্ত সে দেশের ১,২০০ নাগরিক মারা গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৮৯ জন সেনা। গাজ়ার প্রশাসন জানিয়েছে, সেখানে ১,২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।