ইজ়রায়েলে রকেট হামলা। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
প্রস্তুতি চলছিলই। এ বার বড়সড় হামলার পথে হাঁটল ইরানের মদতপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লা। একটি বিবৃতি দিয়ে তারা জানিয়েছে, ইজ়রায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিতে বেশ কয়েকটি ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। লেবানন থেকে উত্তর ইজ়রায়েলে শতাধিক রকেট ছোড়া হয়েছে বলেও খবর সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে। হিজ়বুল্লার হামলার পাল্টা হামলার ছক কষছে ইজ়রায়েলি সেনাও। ইতিমধ্যে সে দেশে ৪৮ ঘণ্টার জন্য জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে।
অন্য দিকে, হিজ়বুল্লার বিরুদ্ধে বেশ কয়েক দিন ধরেই হামলার ছক কষছিল ইজ়রায়েল। রবিবার ভোর থেকে সেই হামলা শুরু করেছে তারা। ইজ়রায়েল সামরিক বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার ভোর থেকে লেবাননকে লক্ষ্য করে পূর্বনির্ধারিত হামলা চালানো হচ্ছে। ইজ়রায়েলি সামরিক বাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলি চক্কর কাটতে শুরু করেছে লেবাননের আকাশে। হিজ়বুল্লার ঘাঁটি লক্ষ্য করে চলছে পর পর গোলাবর্ষণ।
জুলাই মাসে হিজবুল্লা ও হামাস দুই গোষ্ঠীই বড় ধাক্কা খেয়েছে। হিজবুল্লা নেতা ফুয়াদ সুকারের মৃত্যু হয়েছে ইজ়রায়েলি হানায়। অপর একটি হামলায় হামাস শীর্ষনেতা ইসমাইল হানিয়ারও মৃত্যু হয়েছে গত মাসেই। ইরানের দাবি, ওই হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েলই। তখন থেকেই ইরান হুমকি দিয়ে রেখেছে, ইজ়রায়েল যেন প্রত্যুত্তরের জন্য প্রস্তুত থাকে। হিজ়বুল্লা আক্রমণের পরই মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। প্রধানমন্ত্রী দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টা দেশে জরুরি অবস্থার ঘোষণা করেছেন নেতানিয়াহুর প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট।
উল্লেখ্য, গত ১২ অগস্ট লেবানন থেকে প্রায় ৩০টি রকেট বর্ষণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল ইজ়রায়েলি সেনা। তবে বড়সড় কোনও বিপত্তি হয়নি। ইজ়রায়েলের দাবি, বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্রই পরিত্যক্ত জমিতে গিয়ে পড়েছিল। তবে তার পর থেকেই যে পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের দামামা বেজেছে, তা এক প্রকার বোঝাই গিয়েছিল। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই আমেরিকার প্রতিরক্ষাসচিব লয়েড অস্টিনের সঙ্গে কথা বলেছেন গ্যালান্ট।
পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকার অন্যতম বিশ্বস্ত সঙ্গী ইজ়রায়েল। সাম্প্রতিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে ওয়াশিংটনও। পেন্টাগন থেকে আগেই পশ্চিম এশিয়ায় আরও বাহিনী বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এক দিকে যখন ইজ়রায়েল দফায় দফায় যোগাযোগ করছে আমেরিকার সঙ্গে, অন্য দিকে তখন ইরানও যোগাযোগ রাখছে চিনের সঙ্গে। ফলে ইজ়রায়েল-ইরান সরাসরি যুদ্ধে শামিল হলে পরোক্ষ ভাবে আমেরিকা, চিনের মতো দেশগুলোও জড়িয়ে পড়বে পশ্চিম এশিয়ার সংঘাতে।