গাজ়ার একটি হাসপাতালে অসুস্থদের ভিড়। ছবি: সংগৃহীত।
গাজ়ার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফার আস্ত একটি ভবনকে নিজেদের ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করছিল হামাস! সেখানে তল্লাশি চালিয়ে এমনই দাবি করল ইজ়রায়েলি সেনা। নিজেদের দাবির সপক্ষে একটি ভিডিয়োও প্রকাশ করেছে তারা। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করছেন সেনা আধিকারিকেরা। যদিও কোনও সংবাদ সংস্থা কিংবা আনন্দবাজার অনলাইন এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি।
ইজ়রায়েলের দাবি, ওই হাসপাতালের এমআরআই ভবনকে কব্জা করে নিজেদের অস্থায়ী ঘাঁটি বানিয়েছিল প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস। সেখান থেকে বসেই নাকি গাজ়ায় যাবতীয় প্রযুক্তিগত কাজকর্ম সারত তারা। ইতিমধ্যেই হাসপাতালে হামাসের ঘাঁটিকে চূর্ণবিচূর্ণ করতে বুলডোজ়ার নিয়ে এসেছে ইজ়রায়েলি সেনা। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজ়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, হাসপাতালের দক্ষিণ দিকের প্রবেশপথ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের ভিতর থেকে অস্ত্র উদ্ধারের প্রেক্ষিতে ইজ়রায়েলি সেনার অন্যতম মুখপাত্র জোনাথান কনরিকাস বলেন, “কোনও সন্দেহই নেই যে, হামাস আন্তর্জাতিক আইনকে অমান্য করে হাসপাতালকে সামরিক কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করেছে।” হাসপাতাল থেকেই একে-৪৭, গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
হাসপাতালকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে হামাস, এই অভিযোগ তুলে আল-শিফায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে ইজ়রায়েল। ইজ়রায়েলি ফৌজ জানায়, আল-শিফা হাসপাতালে তারা হামাসের বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রিত হামলা চালাচ্ছে। কেবল হামাসের সদস্যদেরই ‘টার্গেট’ করা হচ্ছে। একটি বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর সেনা জানায়, গাজ়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ওই হাসপাতালে আক্রমণের বিষয়ে আগেই তারা সতর্ক করেছিল। বলা হয়েছিল, ১২ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালের সামরিক কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে। হামাসের সদস্যদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। কিন্তু তা করা হয়নি।
রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য বলছে, আল-শিফা হাসপাতালে এই মুহূর্তে অন্তত ২,৩০০ জন রোগী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছে বহু শিশুও। প্যালেস্টাইনের সাধারণ নাগরিকেরাও কেউ কেউ যুদ্ধ চলাকালীন সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ইজ়রায়েলের হামলায় আতঙ্কে সিঁটিয়ে আছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে গত ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েল-হামাস সামরিক সংঘাত শুরু হওয়ার পর প্রথম বারের জন্য সক্রিয় হয়ে ‘মানবিক কারণে যুদ্ধবিরতি’ এবং ‘হামাসের হাতে পণবন্দিদের দ্রুত মুক্তি’র সপক্ষে প্রস্তাব পাশ করায় রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। যদিও ইজ়রায়েল এই প্রস্তাবকে ‘বাস্তবের সঙ্গে সঙ্গতিহীন’ বলে দাবি করেছে।