ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। —ফাইল চিত্র।
বিভিন্ন মহল থেকে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তা সত্ত্বেও গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির ডাকে সাড়া দিতে রাজি হলেন না ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, যুদ্ধ থামানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তাঁরা সে কথা ভাবছেনও না। তবে সাময়িক ভাবে মাঝেমাঝে ত্রাণ এবং অন্যান্য প্রয়োজনে যুদ্ধ থামাতে আপত্তি নেই ইজ়রায়েলের।
নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য ইজ়রায়েলি ফৌজ কিছু ক্ষণ যুদ্ধ থামাতে পারে। হামাসের হাত থেকে পণবন্দিদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার জন্যেও যুদ্ধে সামান্য বিরতি আসতে পারে। তবে সার্বিক ভাবে যুদ্ধবিরতিতে রাজি নন তাঁরা। বরং হামাসকে সমূলে বিনষ্ট করার যে প্রতিজ্ঞা নেতানিয়াহু করেছিলেন, তাতেই এখনও বদ্ধপরিকর ইজ়রায়েল।
গত ৭ অক্টোবর প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইজ়রায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালায় এবং বহু ইজ়রায়েলি নাগরিককে পণবন্দি করে নিয়ে যায়। এর পরেই হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন নেতানিয়াহু। যুদ্ধে আমেরিকা ইজ়রায়েলকে সমর্থন করে। কিন্তু সেই আমেরিকাও গত কয়েক দিন ধরে মানবিকতার খাতিরে ইজ়রায়েলকে যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি একটি আমেরিকান টেলিভিশন চ্যানেলে নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ত্রাণ ইত্যাদি বিশেষ প্রয়োজনে সাময়িক ভাবে যুদ্ধ আমরা আগেও থামিয়েছি, ভবিষ্যতেও থামাব। ত্রাণসামগ্রী পাঠানো, আমাদের পণবন্দিদের উদ্ধার করে দেশে ফেরানোর জন্য কোথাও এক ঘণ্টা, কোথাও দু’ঘণ্টার ‘বিরতি’তে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু সাধারণ ভাবে যুদ্ধবিরতি এখনই হচ্ছে না।’’
হামাস পরিচালিত গাজ়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ইজ়রায়েলের হামলায় গাজ়ায় মৃত্যুর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। আরব দেশগুলির তরফে গাজ়ায় যুদ্ধ থামানোর জন্য ক্রমশ ইজ়রায়েলের উপর চাপ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। হামাসের সমর্থনে অস্ত্র ধরে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লা। ইয়েমেনের হুথিরাও ইজ়রায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে। যুদ্ধ না থামালে ইরান প্রকাশ্যেই আক্রমণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইজ়রায়েলকে। এই পরিস্থিতিতে ইজ়রায়েল, হামাসের দ্বন্দ্ব ক্রমে পশ্চিম এশিয়ার আঞ্চলিক লড়াইয়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।