n শোক: মাউন্ট মেরনে ইহুদিদের এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে ৪৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় রবিবার এক দিনের জাতীয় শোক পালিত হল ইজ়রায়েলে। মৃতদের স্মরণে অর্ধনমিত জাতীয় পতাকা। জেরুসালেমে। রয়টার্স
করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই তীর্থযাত্রায় অনুমতি। আর সেই অনুষ্ঠানে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারালেন কমপক্ষে ৪৫ জন ইহুদি। গত শুক্রবার সে দেশের মাউন্ট মেরনে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘিরে উত্তাল ইজ়রায়েল। এই দুর্ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার খামতিকেই প্রাথমিক ভাবে দায়ী করা হচ্ছে। যা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের উপরে বাড়তি তদন্ত চালানো হবে বলে জানানো হল রবিবার।
উত্তর ইজ়রায়েলের এই পার্বত্য শহরে সমাধিস্থ রয়েছেন ইহুদি ধর্মগুরু র্যাবাই শিমন বার ইয়োচাই। বছরের এই সময়ে দ্বিতীয় শতাব্দীর ওই সমাধিস্থলে ভিড় করেন সারা দেশ থেকে আসা ইহুদি তীর্থযাত্রীরা। গত বছর কোভিডের কারণে এখানে জনসমাগম বন্ধ রাখা হলেও এ বছর সংক্রমণ পরিস্থিতি তুলনায় নিয়ন্ত্রণে থাকায় ততটা কড়াকড়ি ছিল না। সর্বাধিক ১০ হাজার মানুষকে আসার অনুমতি দিয়েছিল প্রশাসন। যদিও অভিযোগ, ইহুদি নেতাদের একাংশ আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে সেখানে আসার অনুমতি দেওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর উপর চাপ দিচ্ছিলেন।
শেষ পর্যন্ত যদিও মোট জমসমাগম লক্ষ ছাড়িয়ে যায় বলে প্রশাসন সূত্রের দাবি। যে স্টেডিয়ামে পুণ্যার্থীদের বসার ব্যবস্থা হয়েছিল তার একটা দিক হঠাৎ ভেঙে পড়ায় হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সে সময় পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান কমপক্ষে ৪৫ জন। জখম হন দেড়শোর বেশি তীর্থযাত্রী। রবিবার এই ঘটনার তদন্তের স্বার্থে নেতানিয়াহুর কাছে একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠনের দাবি জানান এক দল অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার। শীর্ষ রাজনীতিকদের থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট নীতি-নির্ধারক, সকলকেই এই কমিশনের তদন্তের আওতায় রাখার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়, এখন ন্যায় মন্ত্রক যে তদন্ত চালাচ্ছে, সেটিকেও ছাপিয়ে যাবে এই স্বতন্ত্র কমিশনের তদন্ত।
বিশেষজ্ঞরা বহু বার সতর্ক করেছিলেন, বিপুল জনসমাগমের ভার নেওয়ার পরিকাঠামো নেই মাউন্ট মেরনে। তেমনটা হলে তা ঝুঁকির। যে আশঙ্কা সত্যি হল শুক্রবার। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার জাতীয় শোক পালন করা হয়। দেশ জুড়ে তো বটেই বিদেশে ইজ়রায়েলের দূতাবাসগুলিতেও অর্ধনমিত রাখা হয়েছিল দেশের পতাকা।
আপাতদৃষ্টিতে অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্ব ধর্মীয় পরিষেবা মন্ত্রকের অধীনে ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর হোলি প্লেসেস’-এর কাঁধে থাকলেও ওই মন্ত্রকেরই এক প্রাক্তন শীর্ষ আধিকারিক সম্প্রতি জানিয়েছেন, কোনও একটি সংগঠন পুরোপুরি এর আয়োজন করে তেমনটা বলা যাবে না। একাধিক ধর্মীয় ট্রাস্ট মাউন্ট মেরনের দায়িত্বে রয়েছে। সেগুলিকে এক প্রশাসনিক সূত্রে গাঁথার দাবি উঠলেও তা এখনও হয়ে ওঠেনি। অভিযোগ, অনেক সময়েই এই ট্রাস্টগুলির চাপের মুখে মাথা নোয়াতে হয় সরকারি কর্তাদের। ট্রাস্টগুলির ‘বিভিন্ন অন্যায় দাবি’ মেনে নিতে বাধ্য হন তাঁরা। এই দুর্ঘটনার নেপথ্যেও কি রয়েছে তেমন কিছু? খতিয়ে দেখা হচ্ছে সব সম্ভাবনাই।