ইজ়রায়েলের হামলায় এ বারে সত্যিই একপ্রকার থমকে গিয়েছে ইরানের পরমাণু অস্ত্র গবেষণা। —ফাইল ছবি।
গত মাসের শেষের দিকে ইরানের পরমাণু অস্ত্র কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েলি যুদ্ধবিমান। যদিও সে সময়ে ইরান এ নিয়ে উচ্চবাচ্য করেনি। ক্ষয়ক্ষতির কথাও স্বীকার করেনি তারা। এখন অবশ্য শোনা যাচ্ছে, ইরানের ‘টপ সিক্রেট’ পরমাণু অস্ত্র গবেষণাগার, যার কথা কেউ সে ভাবে জানতই না, সেই গোপন স্থানটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে ইজ়রায়েল। কৃত্রিম উপগ্রহচিত্রে ধরা পড়েছে সেই দৃশ্য।
গত মাসে ইরানের পারচিন মিলিটারি কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েলি বাহিনী। এখানকার পরমাণু অস্ত্র গবেষণাগারটি সক্রিয় থাকলেও গোপনীয়তায় মুড়ে রেখেছিল ইরান। এই মিলিটারি কমপ্লেক্সের ‘টেলেগান ২’ কেন্দ্রটিকে এতদিন নিষ্ক্রিয় বলে মনে করা হত। ইজ়রায়েলের হামলায় এ বারে সত্যিই একপ্রকার থমকে গিয়েছে ইরানের পরমাণু অস্ত্র গবেষণা। গত বছর থেকে গোপনে এই মিলিটারি কমপ্লেক্সে পরমাণু অস্ত্র তৈরি নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছিল। সূত্রের খবর, ইজ়রায়েলের হামলায় গবেষণাগারের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যেমন, একটি যন্ত্রের সাহায্যে পরমাণু অস্ত্রের প্লাস্টিকের একটি অংশ তৈরি করা হত। সেই অংশটি পরমাণু অস্ত্রের ইউরেনিয়ামের অংশটিকে ঘিরে রাখত। যন্ত্রটিকে ধ্বংস করেছে ইজ়রায়েল। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, প্লাস্টিকের অংশটি বিস্ফোরকের ‘ডিটোনেটর’ হিসেবে কাজ করত।এই অংশটি তৈরি করার যন্ত্রটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় বিস্ফোরণ প্রক্রিয়াটিই সম্ভব হবে না।
ইরান অবশ্য এ সব নিয়ে মুখ খুলতে চাইছে না। এ দেশের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি পরমাণু অস্ত্র গবেষণার বিষয়টিই সম্পূর্ণ অস্বীকার করে গিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘ইরান পরমাণু অস্ত্রের পিছনে ছুটছে না। ইজ়রায়েল, আমেরিকা অন্য গল্প শোনাচ্ছে।’’
সূত্রের খবর, ইরানের আমাদ পরমাণু অস্ত্র প্রকল্পের অংশ ছিল ‘টেলেগান ২’ কেন্দ্রটি। কিন্তু ২০০৩ সালে সেই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। সূত্রটির দাবি, সম্প্রতি গোপনে পরমাণু অস্ত্র গবেষণা শুরু করেছিল ইরান। এ বিষয়ে ইজ়রায়েলকে সতর্ক করে আমেরিকা। তার আগে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে ইরানকে সাবধান করা হয়েছিল। অভিযোগ, সে সব কানে তোলেনি ইরান। বরং তাদের মতিগতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। সম্প্রতি কৃত্রিম উপগ্রহচিত্রে দেখা গিয়েছে, ‘টেলেগান ২’ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।