Israel Lebanon Conflict

লেবাননে হামলা অব্যাহত, নিহত ২০০০ ছাড়াল

খোলা আকাশই ঠিকানা। এ ছাড়াও মাসনা বর্ডার ক্রসিং দিয়ে লেবানন থেকে সিরিয়ায় পালাচ্ছিলেন দলকে দল মানুষ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেরুট শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৫৯
Share:

বেরুটে ই‌জ়রায়েলি বোমাবর্ষণ অব্যাহত। ছবি রয়টার্স।

লেবাননের রাজধানী বেরুটে ই‌জ়রায়েলি বোমাবর্ষণ অব্যাহত। গত কয়েক দিনে কয়েক ডজন প্রাণহানি ঘটেছে। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ইজ়রায়েলি হামলায় দু’হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন দেশে। এর মধ্যে রয়েছে ১২৭টি শিশু। ২৬১ জন মহিলা। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে সিরিয়ায় পালাচ্ছিলেন। কিন্তু এখন সেই পথও খোলা রাখছে না ইজ়রায়েল। নিজের দেশেই কার্যত কোণঠাসা লেবাননের মানুষ, প্রতিপক্ষের বারুদে পুড়ছে।

Advertisement

বেরুট-সহ দক্ষিণ লেবাননের একাধিক অঞ্চল পুড়ে খাক। বহুতলগুলোর কঙ্কাল বেরিয়ে এসেছে। কোথাও আবার পাথরের স্তূপ বুঝিয়ে দিচ্ছে, কয়েক দিন আগেও সেখানে কারও ঠিকানা ছিল। রাস্তার ধারের গাছগুলোও পোড়াকাঠ। বেশ কিছু আশ্রয় শিবির খুলেছে প্রশাসন। অনেকে আবার সমুদ্রের ধারে তাঁবু গেড়ে থাকছেন। খোলা আকাশই ঠিকানা। এ ছাড়াও মাসনা বর্ডার ক্রসিং দিয়ে লেবানন থেকে সিরিয়ায় পালাচ্ছিলেন দলকে দল মানুষ। বৃহস্পতিবার রাতে পাহাড়ে ঘেরা সেই সীমান্ত এলাকাটির একমাত্র সড়ক পথটিও বোমা ফেলে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইজ়রায়েল। হিজ়বুল্লা সদস্য তথা লেবাননের পরিবহণ মন্ত্রী আলি হামিয়ে জানান, সীমান্ত সড়কটি আর চলার যোগ্য নেই। এক-এক জায়গায় প্রকাণ্ড ভগ্নস্তূপ। কোথাও আবার ১২ ফুট গভীর গহ্বর তৈরি হয়েছে। হামিয়ে বলেন, ‘‘ওই সুবিশাল পাথরের স্তূপ পেরিয়ে যাওয়া অসম্ভব।’’ ফলে মাঝপথে আটকে রয়েছেন হাজারও মানুষ। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে দুর্গম পথ পেরোনোর চেষ্টা করেছেন অনেকে। যাঁরা সড়কপথে নিজেদের গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁদের গাড়ি ফেলে রেখে পায়ে হেঁটে এগোতে হচ্ছে। নিজেদের সংসার বাক্স-প্যাটরায় ভরে অজানার উদ্দেশে এগোনো অসম্ভব চেষ্টা। বাচ্চা-ছেলেমেয়ে-বুড়োবুড়ি, অসংখ্য ভয়ার্ত মুখ। প্রতিনিয়ত তারা আশঙ্কায়, এই বুঝি ফের বোমা ফেলে ইজ়রায়েল।

গাজ়া ভূখণ্ডের মতোই লেবাননের সাধারণ বসতি এলাকায় বোমা ফেলা নিয়ে নীরব ইজ়রায়েল। ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)-র ব্যাখ্যা, তারা একটি দু’মাইল দীর্ঘ একটি সুড়ঙ্গপথ নিশানা করেছিল। হিজ়বুল্লা ওই সুড়ঙ্গটি ব্যবহার করত। আইডিএফের দাবি, ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে হিজ়বুল্লার ‘ইউনিট ৪৪০০’ ইরানি অস্ত্র লেবাননে নিয়ে আসছিল। সুড়ঙ্গটি ধ্বংস করার সময়ে তার পার্শ্ববর্তী বাড়ি, অস্ত্রভান্ডার ও অন্যান্য পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Advertisement

গত বছর হামাস-ইজ়রায়েল যুদ্ধ শুরু হওয়া ইস্তক তেল আভিভকে সামরিক সাহায্য করে চলেছে আমেরিকা। একই সঙ্গে প্যালেস্টাইনিদেরও ত্রাণ পাঠিয়ে যাচ্ছে তারা। এ বারে লেবাননকেও মানবিক সাহায্য পাঠানোর কথা ঘোষণা করল আমেরিকা। তাদের বিদেশ দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৫ কোটি ৭০ লক্ষ ডলার সাহায্য দেওয়া হবে। একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘যুদ্ধের জেরে নিজের দেশেই আশ্রয়হীন লেবাননের অসংখ্য মানুষ। তাদের জন্য এই অর্থসাহায্য। যাঁরা সিরিয়ায় চলে যেতে চাইছেন, তাঁদেরকেও এই সহায়তা দেওয়া হবে।’’ উল্টো দিকে, ইজ়রায়েলের জন্যেও বছরে কমপক্ষে ৩৮০ কোটি ডলারের সামরিক সাহায্য পাঠাচ্ছে আমেরিকা। সংবাদ সংস্থা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement