সিরিয়ার মাটিতে ইজ়রায়েলি প্যারাট্রুপার বাহিনী। —ফাইল চিত্র।
সমগ্র গোলান মালভূমি-সহ দক্ষিণ সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ দখল হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। ধারাবাহিক বিমানহানায় ইজ়রায়েল ধ্বংস করে দিয়েছে সিরিয়ার অধিকাংশ সামরিক পরিকাঠামো। বিদ্রোহীদের হামলার জেরে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছাড়ার পর এ বার সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে নজর তেল আভিভের।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস শুক্রবার ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কাছে সিরিয়ায় হামলা বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা উপেক্ষা করে রাত থেকেই হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা। এ বার সরাসরি নিশানা করা হয়েছে দামাস্কাসকে। গত রবিবার প্রেসিডেন্ট আসাদ সরকারকে উৎখাত করে সিরিয়ার রাজধানী দখল করেছিল বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এবং তাদের সহযোগী ‘জইশ আল-ইজ্জা’র যৌথবাহিনী। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হয়নি।
সিরিয়ার ক্ষমতার পালাবদলের পরেই নেতানিয়াহু সরকার জানিয়েছিল, সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা প্রতিরোধে একটি ‘নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল’ (বাফার জ়োন) গঠন করা হবে। আর তা হবে সিরিয়ার ভূখণ্ডে! প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালের যুদ্ধের পর গোলান মালভূমি সংলগ্ন ‘বিতর্কিত অঞ্চল’-এ যে বাফার জ়োন তৈরি করা হয়েছিল, তা ইতিমধ্যেই দখল করে নিয়েছে নেতানিয়াহুর বাহিনী। এর পরে ইজ়রায়েলি প্যারাট্রুপার এবং সাঁজোয়া বাহিনী ‘গ্রাউন্ড অপারেশন শুরু করেছে।
পশ্চিম এশিয়ার সংবাদমাধ্যম আল জাজ়িরা জানিয়েছে, শুক্রবার বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দামাস্কাসের নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিরিয়া সেনার চতুর্থ ডিভিশনের সদর দফতর ও রাডার স্টেশন ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। একনায়ক আসাদের শাসন থেকে মুক্তির জন্য শুক্রবার রাতে সিরিয়ার নাগরিকদের উৎসব পালনের জমায়েতেও বোমা ফেলেছে ইজ়রায়েলি যুদ্ধবিমান। এই যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই পশ্চিম এশিয়া সফরে গিয়েছেন আমেরিকার বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি জর্ডনের সুলতান দ্বিতীয় আবদুল্লা এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোগানের সঙ্গে শুক্রবার সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এইচটিএস-নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার নতুন সরকার ইজ়রায়েলি হামলা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। নয়া সরকারি মুখপাত্র ওবেদা আরনৌত জানিয়েছেন, একটি বিচারবিভাগীয় ও মানবাধিকার কমিটির গড়ে সংবিধান পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় রদবদলের বিষয়টি তাঁদের অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। কিন্তু তার আগেই ইজ়রায়েলি সেনা সিরিয়ার মানচিত্র বদলে দিতে পারে বলে সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন।