স্বপ্ন একটাই। ভবিষ্যতে সাংবাদিক হওয়া। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। তবে লক্ষ্যে অবিচলই থেকেছেন বরাবর। দৃষ্টিশক্তি নেই তো কী হয়েছে, কানে শুনে আর ছুঁয়ে দেখেই মিশরের আলেজান্দ্রিয়া শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে দৈনন্দিন জীবনের ছবি তুলে বেড়ান ২২ বছরের তরুণী ইসরা ইসমাইল।
পেশা হিসেবে সাংবাদিকতাকেই বেছে নিতে চান ইসমাইল। কলেজেও মাস মিডিয়া নিয়ে পড়াশোনা করতে চান তিনি। তাই এখন থেকেই ফটোগ্রাফির হাত পাকিয়ে নেওয়া শুরু করে দিয়েছেন। ইসমাইল বলেন, ‘‘মাস মিডিয়া নিয়ে পড়াশোনা করব বলেই ফটোগ্রাফি বেছে নিয়েছি। আমি সব রকম ভাবেই চেষ্টা করছি, যাতে মাস মিডিয়া নিয়ে পড়াশোনা করতে পারি। কিন্তু ফটোগ্রাফির পরীক্ষায় আগে পাশ করতে হবে আমাকে। তাই কলেজেই ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা শুরু করি।’’
শুরুতে মোবাইল দিয়ে ছবি তুলতেন ইসমাইল। কিন্তু নিজেও জানতেন, আসল ক্যামেরায় ছবি তোলা তাঁকে অভ্যাস করতেই হবে। সেই সময় তাঁর পরিচয় হয় খালেদ ফারিদ নামে এক ফটোগ্রাফারের সঙ্গে। তিনিই আসল ক্যামেরায় ছবি তোলার পাঠ দেন ইসমাইলকে। তরুণীর কথায়, ‘‘মোবাইল দিয়ে ফটো তোলা নয়, ক্যামেরা দিয়ে কী ভাবে ফটো তুলতে হয়, খালেদই আমাকে দেখাল প্রথম।’’
কিন্তু কী ভাবে ছবি তোলেন তিনি?
ইসমাইল বলছেন, ‘‘কোনও বস্তুকে আগে ছুঁয়ে দেখে তার মাপ, আয়তন সম্পর্কে নিজের মধ্যে ধারণা তৈরি করে নিই। কোনও ব্যক্তির মুখচ্ছবি নেওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে কথাও বলতে থাকি। যাতে আওয়াজ শুনে বুঝতে পারি, ওই ব্যক্তি ঠিক কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছেন। তার পর ছবি তুলি।’’
রহমা আবদেলরহমান ও তাঁর স্বামীর ছবি তুলে দিয়েছিলেন ইসমাইল। রহমা বলছেন, ‘‘ও আগে আমাদের ছুঁয়ে দেখে নিচ্ছিল। আমাদের সঙ্গে টানা কথাও বলে যাচ্ছিল। যাতে ও বুঝতে পারে, আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি। তার পর আমাদের অনেকগুলো ছবি তুলল ইসমাইল। সব ছবিই অপূর্ব।’’