পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। —ফাইল চিত্র।
তোশাখানা মামলায় পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কারাবাসের সাজা কি স্থগিত হবে? ইসলামাবাদ হাই কোর্টে ওই সাজার বিরুদ্ধে ইমরানের আবেদনের শুনানি সোমবার হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার তার রায় ঘোষণা করা হবে। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি আমির ফারুখ এবং বিচারপতি তারিক মেহমুদ জাহাঙ্গিরির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, মঙ্গলবার ঠিক সকাল ১১টায় ইমরানের মামলার রায় ঘোষণা করবে আদালত।
তোশাখানা মামলায় তিন বছরের কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ইমরানকে। কিন্তু পরে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ওই বিচারপ্রক্রিয়ায় বেশ কিছু ত্রুটি রয়েছে। সাজার বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ হাই কোর্টে আবেদন জানান ইমরান। গত ২২ অগস্ট তাঁর আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছিল। শুক্রবার পাক নির্বাচন কমিশনের তরফে কোনও আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় শুনানি হয়নি। তার পর সোমবার মামলাটি আবার শোনে হাই কোর্ট।
ইমরানের আইনজীবীর যুক্তি ছিল, তাঁর মক্কেলের বিচারপ্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়ো করা হয়েছে। তাই তাতে অনেক ত্রুটি রয়ে গিয়েছে। কারাবাসের সাজা বাতিল করার আবেদন জানান ইমরানের আইনজীবী। বিচারপতিরা সোমবার শুনানি শেষে রায় দান স্থগিত রাখেন। পরে মঙ্গলবার সকালে রায় ঘোষণার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের পর অনেকেই মনে করছেন, ইসলামাবাদ হাই কোর্টের রায় ইমরানের পক্ষে যেতে পারে।
গত ৫ অগস্ট ইসলামাবাদের বিশেষ আদালত তোশাখানা মামলায় ইমরানকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের জেলের শাস্তি ঘোষণার পরই গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। এর পর পাক আইন মেনে সে দেশের নির্বাচন কমিশন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর চেয়ারম্যান ইমরানের পাঁচ বছর ভোটে লড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।
তোশাখানা দুর্নীতির অভিযোগের সূত্রপাত গত বছর ইমরান ক্ষমতা হারানোর পরে। দুবাইয়ের এক ব্যবসায়ী দাবি করেন, বিদেশ থেকে ইমরানের উপহার পাওয়া ঘড়ি তিনি ২০ লক্ষ ডলারে কিনে নিয়েছিলেন। ওই ব্যবসায়ী জানান, ২০১৯ সালে যখন ইমরানের দল পাকিস্তানের শাসনক্ষমতায় ছিল, তখন সৌদি আরবের রাজা মহম্মদ বিন সলমন তাঁকে ওই বহুমূল্য ঘড়ি উপহার দিয়েছিলেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ইমরানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইমরান গত অক্টোবরে ইসলামাবাদ হাই কোর্টে আবেদন জানালেও আদালত তা খারিজ করে দিয়ে আদালতের বিচারপ্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে বলেছিল তাঁকে। এর পর গত মে মাসে ইসলামাবাদ পুলিশ লাইনসের বিশেষ আদালত ইমরানকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল।