এশিয়া কাপে কি দেখা যাবে এই দৃশ্য? ছবি: টুইটার।
তাঁর জনপ্রিয় নাম ‘লেডি গোল’।
মাঝ মাঠে তাঁর পায়ে বল গেলেই ত্রাস জাগে বিপক্ষের গোলমুখে। ইসলামিক রাষ্ট্রে মহিলাদের ঘিরে থাকা হাজার বেড়াজাল পাশ কাটিয়ে তিনি ইরানের মহিলা ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন। সেই নিলোফার আর্দালানের পা থেকে বল ছিনিয়ে নিলেন জীবনে ফুটবল না খেলা স্বামী। সৌজন্যে ইরানের এক বিশেষ আইন।
মালয়েশিয়ায় শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপ। ইরানের মহিলা ফুটবল দলও তাতে অংশ নিচ্ছে। নির্বাচকরা চূড়ান্ত দল আগেই ঘোষণা করেছেন। ইরানের ফুটবলপ্রেমীদের প্রত্যাশা মতোই দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব বর্তেছিল নিলোফার আর্দালানের উপর। কিন্তু, আর্দালানের ক্রীড়া সাংবাদিক স্বামী মেহদি তোতোঞ্চি চান না স্ত্রী এখন বিদেশে যান। ইরানের আইন অনুযায়ী, স্বামী চাইলে স্ত্রী’র বিদেশযাত্রা আটকাতে পারেন। মেহদি সেই আইনে বলীয়ান হয়ে নিজের ক্ষমতা দেখিয়েছেন। আর্দালানের পাসপোর্টটি কেড়ে নিয়েছেন তিনি। ফলে আর্দালানের দেশ ছাড়া হচ্ছে না। ক্যাপ্টেন তথা সবচেয়ে ক্ষিপ্র ফুটবলারকে বাদ দিয়েই সম্ভবত মালয়েশিয়া যেতে হচ্ছে ইরানের মহিলা ফুটবল দলকে।
আর্দালান-তোতোঞ্চির ছেলে সবে স্কুলে ভর্তি হয়েছে। এশিয়া কাপ চলাকালীনই স্কুল শুরু হবে তার। মেহদি চান, ছেলের স্কুলে যাওয়ার প্রথম দিনে বাড়িতেই থাকুন আর্দালান। কিন্তু, তা কী ভাবে সম্ভব ব্যস্ত ফুটবলারের পক্ষে! এশিয়া কাপের মতো এত গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট ছেড়ে মাঝপথে মালয়েশিয়া থেকে ইরান কী ভাবে ফিরবেন আর্দালান? এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীয়ে বচসা। এবং তা পরেই মেহদির সিদ্ধান্ত, আর্দালান মালয়েশিয়া যাবেন না।
ইরান এবং অন্যান্য কয়েকটি দেশের গণমাধ্যমে আর্দালানের ঘটনা নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে। আর্দালান নিজের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেছেন, “আমি এক জন জাতীয় যোদ্ধা এবং আমি দেশের পতাকা তুলে ধরতে চাই। আমার আশা, দেশে এমন কোনও আইন তৈরি হবে যাতে মহিলা যোদ্ধারা দেশের পতাকা বহন করার সুযোগ পান।”