প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। —ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ পাল্লার ‘হাইপারসনিক’ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণে সফল হল ভারত। আজ এ কথা জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। দেড় হাজার কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত বিভিন্ন অস্ত্র বহন করতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্রটি। এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের প্রযুক্তি বিশ্বের অল্প কয়েকটি দেশের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজনাথ। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের সময়ে ক্ষেপণাস্ত্রটির যাত্রাপথে নানা দিক থেকে সেটির উপরে নজর রাখা হয়েছিল। যাত্রাপথের শেষ দিকে ক্ষেপণাস্ত্রটি ঠিক ভাবেই গতিপথ পরিবর্তন করেছে এবং লক্ষ্যবস্তুকে ঠিক ভাবে আঘাত করেছে বলে জানিয়েছে প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা (ডিআরডিও)। শনিবার রাতে এই পরীক্ষা করা হয়।
ডিআরডিও-র তরফে জানানো হয়েছে, হায়দরাবাদে ডক্টর এপিজে আব্দুল কালাম মিসাইল কমপ্লেক্সে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্র। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘হাইপারসনিক’ ক্ষেপণাস্ত্রের গতি শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি। তাদের পাল্লা সাধারণ ৬,১২৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা থেকে ২৪,১৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার মধ্যে।
‘হাইপারসনিক’ ক্ষেপণাস্ত্র মূলত দু’ধরনের। ‘হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকলস’ গোষ্ঠীর ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে রকেট বুস্টার থাকে। নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছনোর পরে রকেট বুস্টার থেকে ক্ষেপণাস্ত্র আলাদা হয়ে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুর দিকে এগোয়। ‘হাইপারসনিক ক্রুজ় মিসাইল’-এ থাকে স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন। সেগুলি কম উচ্চতায় ওই ইঞ্জিনের সাহায্যে উড়ে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, সাধারণ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে না। কিন্তু ‘হাইপারসনিক’ ক্ষেপণাস্ত্রের সেই ক্ষমতা আছে। ফলে তাদের গতিপথ নির্ধারণ করা শত্রুর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। তা ছাড়া গতিপথ পরিবর্তনের ক্ষমতা থাকায় তারা লক্ষ্যবস্তুতে আরও নিখুঁত ভাবে আঘাত করতে পারে। সাধারণ ও পরমাণু, দু’ধরনের অস্ত্রই (ওয়ারহেড) বহন করতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি।