মাহসা আমিনির মৃত্যুতে জ্বলছে ইরান। ছবি রয়টার্স।
মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে ইরান-জুড়ে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। কাল এই নিয়ে একটি মেয়েদের স্কুলে ঝামেলা বাধে। সরকারি-বিরোধী বিক্ষোভে স্কুলপড়ুয়ারা কতটা প্রভাবিত, তা পরীক্ষা করতে ছাত্রীদের মোবাইল ফোন ঘেঁটে দেখতে চেয়েছিলেন স্কুলের কর্মীরা। তা থেকে শুরু হয় বাদানুবাদ। অভিযোগ, এর পর বিক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের ছত্রভঙ্গ করতে স্কুলে এসে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। ফলে বিতর্ক নতুন মাত্রা নিয়েছে।
সোমবারের এই ঘটনার কথা অস্বীকার করেছে দেশের শিক্ষা মন্ত্রক। তাদের দাবি, বিক্ষোভ চলাকালীন বেশ কিছু ছাত্রীর রক্তচাপ নেমে গিয়েছিল। অসুস্থ হয়ে পড়ে অনেকে। সে জন্য জরুরী পরিষেবার ব্যবস্থা করতে হয়। কিন্তু কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়নি। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে ঘটনার ভিডিয়ো। তাতে দেখা যাচ্ছে স্কুলের বাইরে সশস্ত্র বাহিনী। একটি ভিডিয়ো ক্লিপে পরিষ্কার দেখা গিয়েছে, মোটরবাইকে বসে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ছে নিরাপত্তাবাহিনী।
‘যথাযথ পোশাক’ না পরায় ২২ বছর বয়সি কুর্দিশ-ইরানি মহিলা মাহসা আমিনিকে আটক করেছিল ইসলামিক রিপাবলিক নীতি পুলিশ। পরে পুলিশ হেফাজতে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর পাঁচ সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। ইরান এখনও উত্তপ্ত। মানবধিকার সংগঠনগুলির দাবি, আন্দোলনে অন্তত ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কালও একটি বিক্ষোভ চলেছে ইরানে। হামেদান শহরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবেশ করেছিলেন পড়ুয়ারা। এক সরকারি কর্তা এসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর উপস্থিতিতে প্রতিবাদ জানান পড়ুয়ারা। সরকার অবশ্য এ নিয়ে কোনও কথা বলতেই রাজি নয়।
স্কুল-প্রসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, গত কাল তেহরান হাই স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল পড়ুয়াদের ফোন পরীক্ষা করে দেখার নির্দেশ দেন। এর পরেই স্কুলের কর্মীদের সঙ্গে পড়ুয়া, তাদের মা-বাবাদের ঝামেলা বাধে। দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, এর পরেই আচমকা স্কুলটিতে চলে আসে বাহিনী। অন্তত এক জন পড়ুয়ার জখম হওয়ার খবর নিশ্চিত করে জানা গিয়েছে। বাকি ঘটনা খুবই অস্পষ্ট। পুলিশ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তেহরান পুলিশ বরং বলেছে, ‘‘হাই স্কুলের সামনে থেকে ঝামেলার খবর মিলেছিল... পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে রওনা দেয়। তদন্ত করে দেখা হয়েছে। কিছু দুষ্কৃতীর কাজ।’’