খেলা দেখতে এসে হেনস্থার শিকার ইরানের সমর্থকেরা। ছবি সংগৃহীত।
ইরানের হিজাব-বিরোধী আন্দোলনের আঁচ আগেই এসে পড়েছে বিশ্বকাপ ফুটবলের মঞ্চে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইরানের ফুটবল দল জাতীয় সঙ্গীতে গলা না মিলিয়ে দেশের আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। ইরান সরকারের দমন নীতির বিরুদ্ধে ইরানের ফুটবল খেলোয়াড়দের সেই বার্তা এক নিমেষে মন জয় করে নিয়েছিল নেটিজ়েনদের একাংশের। তবে বিষয়টি এখানেই থেমে নেই। কাতারে খেলা দেখতে আসা হিজাব-বিরোধী আন্দোলনের সমর্থকদের এ বার অভিযোগ, স্টেডিয়াম হোক বা স্টেডিয়ামের বাইরে, এ দেশে নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে তাঁদের।
গত কাল হিজাব-বিরোধী আন্দোলনের সমর্থকদের একাংশ এক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন যে, ইরান ও ওয়েলসের ম্যাচ চলাকালীন নানা ভাবে তাঁদের হেনস্থা ও বিদ্রুপ করেছেন ইরান সরকারের সমর্থকেরা। এক দল যুবক যেমন অভিযোগ করেছেন, খেলা দেখতে ঢোকার মুখে তাঁদের কাছ থেকে পতাকা কেড়ে নেওয়া হয়। তাঁদের মৌখিক ভাবেও হেনস্থা করেন সরকারপন্থী ফুটবল সমর্থকেরা। দোহার স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। ইরান সরকারের বিরুদ্ধে লেখা নানা ধরনের পোস্টার ও ব্যানার তাঁদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
ওই ম্যাচ চলাকালীন স্টেডিয়ামের ভিতরে চোখ দিয়ে রক্ত ঝরছে এমন মেকআপ করা এক তরুণীকে মাহসা আমিনির নাম লেখা জার্সি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। তাঁর পাশে দাঁড়ানো এক পুরুষের হাতে লেখা ছিল ‘ওম্যান, লাইফ, ফ্রিডম’। তবে ওই একই স্লোগান দেওয়া টি-শার্ট পরা এক দল যুবককে সরকারপন্থীরা হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। অনেকেই আবার জানিয়েছেন, সরকারি দমন নীতির ফলে নিহত বিক্ষোভকারীদের নাম হাতে আর বুকে লিখে নিয়ে যাওয়ায় তাঁদের স্টেডিয়ামে ঢুকতে বাধা দেয় খোদ কাতারের পুলিশ। নামগুলি ধুয়ে সাফ করে তবেই তাঁরা খেলা দেখতে ঢুকতে পারেন। এক তরুণী আবার জানিয়েছেন, ইরানে পুলিশি অত্যাচারে নিহত তরুণী মাহসা আমিনির ছবি দেওয়া টি-শার্ট পরে থাকায় তাঁকে স্টোডিয়ামে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
হেনস্থার হাত থেকে ছাড় পাননি ইরানের খেলোয়াড়েরাও। দ্বিতীয় ম্যাচ শুরুর আগে জাতীয় সঙ্গীতে গলা মেলানোয় দোহায় সরকারপন্থীদের বিদ্রুপের শিকার হতে হয়েছে ইরানের ফুটবলারদের।