Iran

আমেরিকা-ইজরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি! ‘অপরাধী’-কে ফাঁসিতে ঝোলাল ইরান

ইরান সরকারের দাবি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইজরায়েলের গুপ্তচর ছিলেন মাজিদ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

তেহরান শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২০ ১৪:০১
Share:

ইরান সরকারের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক কালে বিক্ষোভে সরব হয়েছে জনতা। ছবি: এএফপি।

সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে শামিল হওয়ার ‘অপরাধে’ তিন ব্যক্তিকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিল ইরান। সেই সাজা স্থগিত করা হলেও বিক্ষোভের আগুন নেভেনি সে দেশে।ওই আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের পাশাপাশি দেশের আর্থিক সঙ্কট মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে ইরান সরকারের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক কালে পথে নেমেছে জনতা। তাদের হঠাতে চলেছে পুলিশের দমননীতিও। এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার এক ব্যক্তিকে ফাঁসিতে ঝোলাল ইরান। সরকারের দাবি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইজরায়েলের গুপ্তচর ছিলেন ওই ব্যক্তি।

Advertisement

ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরআইবি (ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ব্রডকাস্টিং) জানিয়েছে, ২০১৮-তে মাহমুদ মৌসবি-মাজিদ নামে ওই ইরানি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে ইরান সরকারের দাবি, প্রাক্তন সেনাকর্তা কাসেম সোলেমানির উপর গুপ্তচরবৃত্তিতে লিপ্ত ছিলেন মাজিদ। এবং আমেরিকা ও ইজরায়েলের অঙ্গুলিহেলনেই সেই কাজ করছিলেন তিনি। যদিও সোলেমানি-হত্যায় মাজিদ কোনও ভাবে জড়িত ছিলেন না বলে জানিয়েছে ইরান।

গত ৩ জানুয়ারি বাগদাদে মার্কিন ড্রোনহানায় নিহত হন ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ডস কোরের মেজর জেনারেল তথা কাডস বাহিনীর প্রধান সোলেমানি। আমেরিকা ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিলেও ইরানি সেনার অন্যতম শীর্ষস্তরীয় সেনাকর্তা ছিলেন তিনি। ক্ষমতার নিরিখে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা এবং সে দেশের ধর্মগুরু আলি খামেনেইয়ের পরেই স্থান ছিল সোলেমানির। তবে ওয়াশিংটনের দাবি ছিল, বাগদাদে মার্কিন সেনার উপর সামরিক মদতে পুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীর মাধ্যমে হানা চালানোর মূল চক্রী ছিলেন সোলেমানি। সেই হামলার ‘প্রতিশোধ’ তুলতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে বাগদাদে ওই ড্রোনহানা চালানো হয়েছিল। যাতে নিহত হন সোলেমানি।

Advertisement

আরও পড়ুন: অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে জিতবেই দক্ষিণ আফ্রিকা

আরও পড়ুন: বাড়িতে বসে ২০ মিনিটেই অ্যান্টিবডি টেস্ট চালু হবে ব্রিটেনে?

এ দিন মাজিদের ফাঁসি এমন একটা সময় কার্যকর করা হল, যখন তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি ইরান। ২০১৮ সাল থেকেই আর্থিক ক্ষেত্রে বেহাল দশা শুরু হয়েছে ইরানে। সে বছর ইরানের সঙ্গে একতরফা ভাবে পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসে আমেরিকা। পাশাপাশি, ইরানের উপর ফের নতুন করে আর্থিক নিষেধাজ্ঞাও বহাল করে মার্কিন সরকার। স্বাভাবিক ভাবেই এর প্রভাব পড়ে ইরানের অর্থনীতিতে। দেশের আর্থিক সঙ্কট কাটাতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে হাসান রৌহানি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শামিল হন ইরানের সাধারণ মানুষ। জনরোষ আরও তীব্র হয় গত নভেম্বরে তিন ইরানির ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হলে। অভিযোগ, সরকার বিরোধী প্রতিবাদে শামিল হওয়াতেই তাঁদের ফাঁসি দিতে চায় ইরান সরকার। সেই সঙ্গে প্রতিবাদীদের দমন করতেই সরকার এই পদক্ষেপ করেছে বলেও দাবি বিক্ষোভকারীদের। তবে সম্প্রতি ওই ফাঁসির সাজা স্থগিত করা হয়। তা সত্ত্বেও জনরোষ কমেনি। গত বৃহস্পতিবার এমনই এক বিক্ষোভে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ বাহিনী।

এই উত্তপ্ত আবহে মাজিদের ফাঁসি ইরান সরকারের দমননীতিরই আরও এক নমুনা বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement