মায়ানমারে অব্যাহত বিক্ষোভ। ছবি—রয়টার্স।
আরও এক বার দেশ জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করল সেনা। কিন্তু মায়ানমারে গণতন্ত্রকামীদের আন্দোলন তাতে থামেনি। উল্টে আজ তা আরও বড় আকার নিয়েছে।
চলতি মাসের গোড়ায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে দেশ শাসনের ভার নিজের হাতে তুলে নিয়েছে সেনা। শুরুতে মূলত সমাজমাধ্যমে গণবিক্ষোভ ঠেকাতে দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছিল সেনা। প্রবল সমালোচনার জেরে পরে তা চালু করা হয়। আজও ফের সেই রাস্তায় হেঁটেছেন সেনা আধিকারিকেরা। সকাল থেকেই বিভিন্ন শহরে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। আজকের ঘটনায় সেনার প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভ আরও বেড়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই বিক্ষোভের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল ইয়াঙ্গন ও তার আশপাশের শহরগুলি। নেট পরিষেবা বন্ধ করার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত সমাজমাধ্যমের লাইভ স্ট্রিমিংয়ে দেখা গিয়েছে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এখানে। রাস্তায় চলছে সেনার সাঁজোয়া গাড়ি।
সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, গত কাল ইয়াঙ্গনের উত্তরে মেকিনা শহরে বিক্ষোভকারীদের হটাতে প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। পরে গুলিও চলে। সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে পথে নামার জন্য ৪০০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সেনার নির্দেশ উপেক্ষা করে আজ ইয়াঙ্গনের উত্তরে বিক্ষোভ দেখান হাজার হাজার ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রছাত্রী। ধরপাকড় চলছে সাংবাদিকদের উপরেও।
মায়ানমারের নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার যাতে কেড়ে না নেওয়া হয়, তার জন্য সেনাকে আরও এক বার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। সেনা যাতে কোনও ভাবেই হিংসার রাস্তা না নেয়, একযোগে সেই আর্জি জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন, আমেরিকার মতো দেশগুলির প্রতিনিধিরাও। কার্ফু উপেক্ষা করে তাদের দেশের নাগরিকেরা যাতে রাস্তায় না বেরোন, সেই আর্জি জানিয়েছে আমেরিকার সরকার। মায়ানমারে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধি টম অ্যানড্রুজ় সেনা কর্তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে টুইটারে লিখেছেন, ‘সব কিছুর জন্য আপনাদেরই দায়ী করা হবে’। এ দিকে, আজই শেষ হচ্ছে এনএলডি নেত্রী আউং সাং সুচি-র গৃহবন্দিত্বের মেয়াদ। তাঁকে আজ মুক্তি দেওয়া হবে কি না নিশ্চয়তা নেই।