প্রতীকী ছবি।
এর আগে তিন-তিন জন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট, জর্জ বুশ, বারাক ওবামা এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের দাবিকে জোর গলায় সমর্থন করেছেন। প্রচারের সময় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনও বিষয়টিকে সমর্থন করে একাধিক বার বিবৃতি দিয়েছেন। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জে আমেরিকার দূত হিসেবে নতুন প্রেসিডেন্ট যাঁকে মনোনীত করেছেন, সেই লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ড বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট সমর্থনের বার্তা দিলেন না। তাঁর মন্তব্য, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। আর এতেই কিছুটা অস্বস্তিতে ভারত। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
এমনিতেই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার ব্যাপারে সবচেয়ে বড় বাধা তার অন্যতম স্থায়ী সদস্য চিন। তারা সরাসরিই ভারতের দাবিতে আপত্তি জানিয়েছে। ভেটো-ক্ষমতা সম্পন্ন চিনের আপত্তির সঙ্গেই রয়েছে ভারতের আর এক প্রতিবেশী পাকিস্তানের প্রবল আপত্তি। একই অবস্থা জার্মানি, ব্রাজিল ও জাপানের। তাদের ক্ষেত্রে আপত্তি রয়েছে যথাক্রমে ইটালি, মেক্সিকো এবং মিশরের। আমেরিকা সেই আপত্তির কথা বিলক্ষণ জানে। তা উপেক্ষা করেই এর আগের তিন জন প্রেসিডেন্ট বিশেষ করে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার ব্যাপারে একাধিক বার জোর সওয়াল করেছিলেন। কিন্তু বুধবার লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ড সেনেটে বিদেশ বিষয়ক কমিটির সামনে কনফার্মেশনের শুনানির সময় ওই মন্তব্য করেন।
সাড়ে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বিদেশ বিভাগে কাজ করা লিন্ডাকে রাষ্ট্রপুঞ্জে আমেরিকার দূত পদে মনোনীত করার আগে কনফার্মেশনের শুনানির সময় ওরেগনের সেনেটর জেফ মার্কলে প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি কি মনে করেন ভারত, ব্রাজিল, জার্মানি এবং জাপানের রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়া দরকার?’’ জবাবে লিন্ডা বলেন, ‘‘নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যপদের বিষয়টি নিয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে ইতিবাচক যুক্তিও রয়েছে। কিন্তু আমি এটাও জানি, ওই অঞ্চলের কয়েকটি দেশ এ ব্যাপারে তাদের আপত্তি জানিয়েছে এবং তাদের দাবি তাদের স্থায়ী সদস্য করা হোক। সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।’’
ভারত, ব্রাজিল, জার্মানি এবং জাপানের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদের দাবি জোরদার করতে চার দেশের গড়ে তোলা জোটের পাল্টা ‘কফি ক্লাব’ জোট গড়েছে পাকিস্তান, মেক্সিকো, ইটালি এবং মিশর। লিন্ডা সেই প্রসঙ্গটির উল্লেখ করেছেন। বাইডেনের মনোনীত লিন্ডার এই মনোভাবেই অস্বস্তিতে ভারত।