মলদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ়ু। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয় সেনাকে মলদ্বীপ ছাড়তে বললেন সে দেশের নতুন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ়ু। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, মলদ্বীপে দীর্ঘ দিন ধরেই ভারতের সেনা রয়েছে। কিন্তু দেশের ‘সার্বভৌমত্বে’র কথা মাথায় রেখে ওই সেনাদের মলদ্বীপ ছাড়তে বলেছেন মুইজ়ু। মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট এ-ও জানান যে, অন্য কোনও দেশেও বিদেশি সেনা থাকলে তিনি একই কথা বলতেন।
মুইজ়ু জানান, সেনা সরানোর বিষয়ে তিনি ইতিমধ্যেই নয়াদিল্লির সঙ্গে কথাবার্তা বলা শুরু করেছেন। প্রাথমিক ভাবে সেই আলোচনা ‘সফল’ হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। বর্তমানে মলদ্বীপে ৭০ জন ভারতীয় সেনা রয়েছেন। ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রে নজরদারির কাজে সে দেশের স্থলসেনা এবং বায়ুসেনাকে সহায়তা করে থাকে ভারতীয় সেনা।
তবে সম্প্রতি সে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে নেমে মুইজ়ু বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলিকে আক্রমণ করে দাবি করেছিলেন যে, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতীয় সেনাকে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি ক্ষমতায় এলে এই ব্যবস্থার বদল ঘটাবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন মুইজ়ু। গোড়া থেকেই মুইজ়ু এবং তাঁর দল ‘চিনপন্থী’ বলে পরিচিত। তবে মুইজ়ু তাঁর সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের কাছ থেকেই সহযোগিতা চান।
অক্টোবরের গোড়ায় মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল প্রকাশ্যে এলে দেখা যায়। মোট বৈধ ভোটের ৫৪.০৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন মুইজ়ু। তার পরেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, নির্বাচনে হার মানতে হয়েছে সোলিকে। মলদ্বীপের এই সাধারণ নির্বাচনে নজর ছিল ভারতেরও। কারণ সোলির ‘দিল্লিঘেঁষা’ নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েই ভোটের ময়দানে নেমেছিল বিরোধী দলগুলি।
২০১৮ সাল পর্যন্ত মলদ্বীপের শাসনক্ষমতায় ছিলেন চিনপন্থী প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন। তাঁর সময় চিনা ঋণ নিয়ে দেশে একাধিক পরিকাঠামোগত নির্মাণ করেন তিনি। ইয়ামিনের ভাবশিষ্য বলে পরিচিত মুইজ়ু এই সমস্ত কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ইয়ামিনকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসেন সোলি। ইয়ামিনের বিরুদ্ধে স্বৈরশাসনের অভিযোগ উঠলেও তাঁর পরাজয়ের নেপথ্যে ভারতের হাত ছিল বলে মনে করেন সে দেশের রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। ভারত অবশ্য সেই দাবি উড়িয়ে দেয়।