সৌরজগতের বাইরে থাকা ওই গ্রহটি মহাকাশের ঘনতম গ্রহ। প্রতীকী ছবি
বৃহস্পতির থেকেও আকারে প্রায় ১৩ গুণ বড় এক গ্রহের সন্ধান পেল ভারতীয় বিজ্ঞানীদের একটি দল। আমদাবাদের ফিজ়িকাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি (পিআরএল)-র বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সৌরজগতের বাইরে থাকা ওই গ্রহটি মহাকাশের ঘনতম গ্রহ। বিজ্ঞানী অভিজিৎ চক্রবর্তীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক মহাকাশ বিজ্ঞানীদের একটি দল এই আবিষ্কারের পিছনে রয়েছে। সম্প্রতি ‘অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজ়িক্স লেটার্স’ নামে একটি পত্রিকায় এই গবেষণার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
পিআরএল-এর এই গবেষক দলটিতে ভারত ছাড়াও আমেরিকা, জার্মানি এবং সুইৎজ়ারল্যান্ডের মতো দেশের বিজ্ঞানীরা রয়েছেন। যে নতুন গ্রহটি সম্প্রতি তাঁরা আবিষ্কার করেছেন, সেটি আসলে একটি এক্সোপ্ল্যানেট। অর্থাৎ সৌরজগতের বাইরে থাকা কোনও সুবিশাল তারার চারপাশে ঘোরে এই অতিকায় নতুন গ্রহটি। একেবারে দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি ‘পিআরএল অ্যাডভান্সড রেডিয়াল-ভেলসিটি আবু স্কাই সার্চ স্পেক্টোগ্রাফ’ (সংক্ষেপে পরস)-এর মাধ্যমে রাজস্থানের শৈল শহর মাউন্ট আবুর গুরুশিখর মানমন্দির থেকে সদ্য আবিষ্কৃত এই গ্রহটির ভর মাপা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, নতুন এই গ্রহটির ভর ১৪ গ্রাম/ঘন সেন্টিমিটার।
পৃথিবী থেকে ৭৩১ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই গ্রহটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘টিওআই ৪৬০৩ বি’ বা ‘এইচডি২৪৫১৩৪বি’। টিওআই ৪৬০৩ বা এইচডি২৪৫১৩৪ নামে এক সুবিশাল তারার চারপাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘোরে এই নতুন গ্রহটি। একবার সেই তারাকে প্রদক্ষিণ করতে এই গ্রহের সময় লাগে ৭.২৪ দিন। বিজ্ঞানীরা আরও জানাচ্ছেন যে, এই নতুন গ্রহটি প্রচণ্ড গরম এবং এটির বহিরাংশের তাপমাত্রাই প্রায় ১৩৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগেও ভারতীয় বিজ্ঞানীদের দল এই রকমই দু’টি এক্সোপ্ল্যানেট আবিষ্কার করেছিল। এখনও পর্যন্ত সৌর জগতের বাইরে ৫ হাজারেরও বেশি এই ধরনের এক্সোপ্ল্যানেটের সন্ধান মিলেছে। যেগুলির প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য এবং আবহাওয়া একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পিআরএল-এর বৈজ্ঞানিক দলটির এই নতুন আবিষ্কারের ফলে সৌরজগতের বাইরে থাকা এক্সোপ্ল্যানেটগুলির গঠন পদ্ধতি, বিবর্তন, অভিবাসন সংক্রান্ত নানা অজানা তথ্য সহজেই বিস্তারিত ভাবে জানা যাবে।