বিতর্কের মুখে পদত্যাগ করেছেন পর্তুগালের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। —ফাইল ছবি
উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবার অভাবে পর্তুগালে মৃত্যু হল এক ভারতীয় অন্তঃসত্ত্বার। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই পদত্যাগ করলেন সে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্তা তেমিদো। দেশে প্রবল সমালোচনার মুখে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ভারত থেকে পর্তুগালে ঘুরতে গিয়েছিলেন ৩৪ বছরের এক তরুণী। অভিযোগ, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তাঁকে এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতালে ঘুরতে হয়। সেই ধকল সহ্য করতে পারেননি তিনি। পথেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। এই খবর জানাজানি হওয়ার পর সমালোচনার ঝড় ওঠে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। মার্তা কিছু দিন আগে চিকিৎসকের অভাবে পর্তুগালে প্রসূতি বিভাগের জরুরিকালীন পরিষেবা সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই কারণেই অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় পর্যটককে এ ভাবে মরতে হল বলে দাবি করছেন অনেকে।
লিসবনের একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা ওই তরুণী। সেখানে উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা না থাকায় তাঁকে আর একটি হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পথে অ্যাম্বুল্যান্সেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন তিনি। জরুরি ভিত্তিতে তাঁর সন্তান প্রসব হয়। প্রসূতি মৃত্যুর এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পর্তুগালের কোভিড পরিস্থিতি দক্ষ হাতে সামলেছিলেন মার্তা। কোভিডের সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর কাজ প্রশংসিত হয়েছিল নানা মহলে। কিন্তু কিছু দিন আগে প্রসূতি বিভাগের জরুরিকালীন পরিষেবা সাময়িক বন্ধের সিদ্ধান্ত মার্তাকে বিতর্কের মুখে ঠেলে দেয়। পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী অ্যান্তোনিয়ো কোস্তা জানিয়েছেন, তিনি মার্তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। তবে মার্তাকে তাঁর কাজের জন্য ধন্যবাদও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে আরও উন্নত করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
পর্তুগালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিতর্কিত সিদ্ধান্তের পর থেকেই দেশের নানা প্রান্তে এমন ঘটনা ঘটছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে তা নিয়ে ক্ষোভও জমছিল বিস্তর। ভারতীয় অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুর পর সেই ক্ষোভের আগুনে যেন ঘি পড়েছে। সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেছেন মার্তা।