নীল বসুই (বাঁ দিকে) উসমান খানের (ডান দিকে) বিরুদ্দে তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
লন্ডন ব্রিজ হামলাতেও, ঘটনাচক্রে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেল ভারত আর পাকিস্তান। হামলাকারী যুবক পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। পাকিস্তানেই তার বেড়ে ওঠা। অন্য দিকে শুক্রবারের সন্ত্রাসের তদন্ত করছে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের যে সন্ত্রাস দমন শাখা, তার প্রধান নীল বসু ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঙালি। তাঁর নেতৃত্বেই চলছে এই হামলার তদন্ত।
লন্ডন পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হামলাকারী ওই যুবকের নাম উসমান খান। বয়স ২৮। শৈশবের একটা বড় অংশই পাকিস্তানে কেটেছে তার। জঙ্গি সংগঠন আলকায়দাকে দেখেই নাশকতা মূলক কাজকর্মে যোগ দেয়। ব্রিটেনে সন্ত্রাসের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে আগেও জেলের ঘানি টেনেছে সে। ২০১২ সাল থেকে জেলে ছিল। গত বছর ছাড়া পায়।
সে দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের সেই মামলায় প্রথমে ৮ বছরের সাজা হয়েছিল উসমানের। এর পর ২০১৩ সালে আপিল আদালত নতুন করে ১৬ বছরের সাজা শোনায় তাকে। সেই সময়ই প্রশাসনকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন বিচারপতি। উসমানের মতো জিহাদি গোটা জাতির পক্ষে বিপজ্জনক এবং কোনও অবস্থাতেই তাকে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্যও করেছিলেন তিনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও, গত বছর শর্তসাপেক্ষে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যায় উসমান। তার পরই এই ঘটনা।
আরও পড়ুন: লন্ডন ব্রিজে ছুরি নিয়ে জঙ্গি হানায় হত অন্তত ২, জখম ৫
আরও পড়ুন: পুরনো প্রবন্ধের জেরে বিড়ম্বনায় পড়লেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে
এ দিন স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডে সাংবাদিক বৈঠক করেন নীল বসু। জানান, শুক্রবার দুপুরে লন্ডন ব্রিজের কাছে ফিশমঙ্গার্স হলে প্রথমে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিল উসমান। সেখান থেকে বেরিয়েই ব্রিজের উপর পথচারীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। এলোপাথাড়ি ছুরি চালাতে থাকে। তাতে দু’জনের মৃত্যু হয়। আহত অবস্থায় এখনও হাসপাতালে ভর্তি অনেকে। হামলাকারী উসমানকে ধাক্কা মেরে ফেলে ধরে ফেলেন পথচারীদেরই কয়েকজন। পরে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় তার।
এর আগে, ২০১৭ সালের জুন মাসে এই লন্ডন ব্রিজেই গাড়ি নিয়ে পথচারীদের চাপা দেয় ৩ আইএস জঙ্গির একটি দল। গাড়ি থেকে বেরিয়ে ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় বেশ কয়েক জনকে ছুরি দিয়ে কুপিয়েও মারে তারা। মোট ১১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। শুক্রবারের ঘটনা দু’বছর আগের সেই স্মৃতিই নতুন করে উস্কে দিয়েছে। তাতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।