প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পালিয়ে যাওয়া ও তার পর বিদ্রোহীদের দামাস্কাস-দখল, এই পরিস্থিতিতে রাতারাতি ৭৭ জন ভারতীয়কে সিরিয়া থেকে লেবানন হয়ে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনছে নয়াদিল্লি। বেশির ভাগই ভারতে পৌঁছে গিয়েছেন, বাকিরাও আজ-কালের মধ্যে চলে আসবেন। যদিও সিরিয়ার নয়া অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিবেচনা করে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, সে দেশের ভারতীয় দূতাবাস চালু থাকবে।
রাশিয়া-সহ বেশির ভাগ দেশই জানিয়েছে, তারা সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। সিরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ আল-বাশির জানিয়েছেন, মার্চ মাসের মধ্যে সংবিধান পর্যালোচনা করে নতুন আইন ব্যবস্থা আনা হবে, সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে এবং তার পর গণতান্ত্রিক পরিচালন ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে। আসাদ-জমানায় যাঁরা অপরাধ করেছেন, তাঁদের বিচার হবে আইনি প্রক্রিয়াতেই। বিদ্রোহী সংগঠনগুলিও বলছে, ‘‘যুদ্ধ চাই না। মানুষ যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত।’’ শান্তি, স্থিতাবস্থা ও উন্নয়নেই জোর দিচ্ছে নয়া সরকার। আজ তারা রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির কাছেও আবেদন জানিয়েছে, তারা যেন সিরিয়া ছেড়ে চলে না যায়। এই মুহূর্তে তাদের থেকেই সব বেশি সাহায্য প্রয়োজন।
আসাদ-জমানায় নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে সিরিয়া ছেড়ে পালান লাখো মানুষ। তাঁদের অনেকেই দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। নয়া সরকারও তাঁদের ফেরার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। এমনই এক জন মাজ়েন কেওয়ারা। পেশায় শল্যচিকিৎসক কেওয়ারা ১৩ বছর ধরে প্রবাসে। আসাদ-পতনের এক দিন পরেই নির্বাসন থেকে দেশে ফিরেছেন তিনি। কেওয়ারা বলেন, ‘‘সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে যাঁরা বিক্ষোভ-সমাবেশ করতেন, তাঁদের উপর অবাধে গুলি চালাত বাহিনী। আমি সেই জখমদের চিকিৎসা করতাম। এই ছিল আমার অপরাধ।’’
আসাদ-মুক্ত সিরিয়ার প্রথম শুক্রবার আজ। প্রার্থনা শেষে দামাস্কাসের ওমেদ মসজিদ ঘিরে জনস্রোত নেমেছিল। একই দৃশ্য আলেপ্পোয়। প্রবল ঠান্ডা উপেক্ষা করে দেশের নতুন পতাকা হাতে রাস্তাতেই উৎসবে মাতেন সাধারণ মানুষ।