অশান্ত কেনিয়া। ছবি: সংগৃহীত।
জ্বলছে আফ্রিকার ছোট্ট দেশ কেনিয়া। রাজধানী নাইরোবি-সহ দেশের বিভিন্ন শহরে রাস্তায় প্রতিবাদীদের ভিড়। মূল্যবৃদ্ধির জেরে জেরবার দেশবাসীর উপর চাপানো অতিরিক্ত করের বোঝার প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি কেনিয়ায়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এমন পরিস্থিতিতে কেনিয়ায় থাকা ভারতীয়দের সতর্ক করল সে দেশের ভারতীয় দূতাবাস। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বার না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, উত্তপ্ত এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার থেকেই কেনিয়ার বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বলছে। বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের আটকাতে জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে তারা। কিন্তু তাতেও বিক্ষোভকারীদের হটাতে পারেনি। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিয়োতে ধরা পড়েছে হিংসার বেশি কিছু ছবি। যদিও সেই সব ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, উত্তপ্ত জনতা দেশের পার্লামেন্টে ঢুকে পড়ে একাংশে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
পার্লামেন্টে আগুন ধরানোর ঘটনার পরই বিক্ষোভকারীদের হটাতে গুলি ছুড়তে শুরু করে পুলিশ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি জানাচ্ছে, পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর পাশাপাশি আহতও হয়েছেন অনেকে। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশের গুলি চালানোর পর পার্লামেন্ট থেকে বিক্ষোভকারীরা বেরিয়ে গেলেও রাস্তায় রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
করোনার পর থেকেই কেনিয়ার অর্থনীতি ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও ইউক্রেন যুদ্ধ, টানা দু’বছর খরা, মুদ্রার দাম পড়ে যাওয়া— এ রকম নানা সমস্যায় জর্জরিত দেশের অর্থনীতি। আর তার প্রভাব যেমন পড়েছে দেশের রাজকোষে, তেমনই সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনেও। বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে হু-হু করে। তার উপর মে মাসেই দেশে অতিবৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মারা যান অনেকেই। এ রকম অবস্থায় সরকারের কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দেশের মানুষের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দিয়েছে। খাদ্যদ্রব্যের উপর ১৬ শতাংশ কর বসিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে মোটর গাড়ির উপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপানো হয়েছে। পার্লামেন্টে এই কর বৃদ্ধির বিল পাশ হতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারণ মানুষ। হাজার হাজার মানুষ পথে নামেন। তাঁদেরই একটা অংশ পৌঁছে যান পার্লামেন্টে।
এই পরিস্থিতিতে কেনিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করল সে দেশের ভারতীয় দূতাবাস। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে করা এক পোস্টে দূতাবাসের তরফে বলা হয়েছে, ‘‘বর্তমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, কেনিয়া বসবাসকারী সমস্ত ভারতীয়কে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ প্রভাবিত এলাকা এড়িয়ে চলা এবং একই সঙ্গে অপ্রয়োজনে বাইরে না বার হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’’