নিজামের অর্থ নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জিতল ভারত

প্রায় ৭০ বছর ধরে ওই অর্থের মালিকানা নিয়ে লড়াই চলেছে। ২০১৩ সালে পাকিস্তান নতুন ভাবে লড়াই শুরু করে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন ও ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৫৯
Share:

নিজাম ওসমান আলি খান।

ব্রিটেনের ব্যাঙ্কে থাকা হায়দরাবাদের প্রয়াত নিজামের ৩ কোটি ৫০ লক্ষ পাউন্ডের অধিকার নিয়ে আইনি লড়াইয়ে জয়ী হল ভারত। ওই অর্থের উপরে পাকিস্তানের দাবি খারিজ করে দিয়েছে ব্রিটিশ হাইকোর্ট। এক রায়ে আদালত জানিয়েছে, ওই অর্থের উত্তরাধিকারী নিজামের বংশধরেরা। তাঁদের সঙ্গে হাত মিলিয়েই আইনি লড়াই লড়ছিল ভারত।

Advertisement

১৯৪৮ সালে হায়দরাবাদের তৎকালীন নিজাম ওসমান আলি খান লন্ডনের একটি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে প্রায় ১০ লক্ষ ৭ হাজার পাউন্ড পাঠান। ওই অ্যাকাউন্টটি ছিল লন্ডনে নিযুক্ত তৎকালীন পাক হাইকমিশনার হাবিব ইব্রাহিম রহিমতুলার। হায়দরাবাদের ভারতভুক্তির পরে সেই অর্থ ফেরৎ চান নিজাম। ওই অর্থের মালিকানা নিয়ে বিবাদ শুরু হওয়ায় লন্ডনের ব্যাঙ্কটি অর্থ নিজেদের হেফাজতে রেখে দেয়। সুদে আসলে বেড়ে তা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৫০ লক্ষ পাউন্ডে।

প্রায় ৭০ বছর ধরে ওই অর্থের মালিকানা নিয়ে লড়াই চলেছে। ২০১৩ সালে পাকিস্তান নতুন ভাবে লড়াই শুরু করে। বিরোধী পক্ষে ছিলেন নিজাম ওসমানের বংশধর মুকার্‌রম জাহ, তাঁর ভাই মুফ্ফাখম জাহ, নিজামের এস্টেটের প্রশাসক ও ভারত সরকার। পরে এই চার পক্ষ নিজেদের মধ্যে গোপন সমঝোতা করায় লড়াই কার্যত ভারত-পাক যুদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়।

Advertisement

পাকিস্তানের আইনজীবীরা তাঁদের সওয়ালে দু’টি বিষয় তুলে ধরেন। প্রথমত, ১৯৪৮ সালের সেই সময়ে হায়দরাবাদের ভারতভুক্তি রুখতে পাক সাহায্য চেয়েছিলেন নিজাম। পাকিস্তানের দেওয়া অস্ত্রের বিনিময়ে লন্ডনের ব্যাঙ্কে টাকা পাঠানো হয়েছিল বলে সওয়াল করেন পাকিস্তানের কৌঁসুলিরা। দ্বিতীয়ত, ওই অর্থ ভারত সরকারের হাত থেকে ‘রক্ষা’ করার জন্য নিজাম ব্রিটেনে পাঠান বলেও সওয়াল করেছেন তাঁরা। পাকিস্তানের তরফে সওয়ালে আরও জানানো হয়, ওই অর্থ তৎকালীন স্বাধীন হায়দরাবাদ সরকারের তরফে পাক সরকারকে পাঠানো হয়। পরে ভারত ‘বেআইনি’ ভাবে হায়দরাবাদ দখল করে। ফলে ওই অর্থের উপরে ভারত বা নিজামের বংশধরদের আর অধিকার নেই।

বিচারপতি মার্কাস স্মিথ তাঁর রায়ে জানিয়েছেন, নিজ়াম যে পাক অস্ত্রের বিনিময়ে যে ওই অর্থ দিয়েছিলেন তার কোনও প্রমাণ নেই। তিনি যে ভারতের হাত থেকে ওই অর্থ রক্ষা করতে চেয়েছিলেন তার প্রমাণ আছে। তবে তার অর্থ এ নয় যে ওই অর্থ তিনি পাকাপাকি ভাবে পাকিস্তানকে দিয়ে দিয়েছিলেন। নিজামের বংশধরেরাই ওই অর্থের বৈধ উত্তরাধিকারী। হায়দরাবাদের ভারতভুক্তির বৈধতা এই মামলায় বিচার্য নয় বলেও রায়ে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি।

পাক বিদেশ মন্ত্রক জানায়, ভারতের ‘বেআইনি ভাবে’ হায়দরাবাদ দখলের ঐতিহাসিক তাৎপর্য বিচার করেনি হাইকোর্ট। রায়ের সব দিক বিচার করে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে পাকিস্তান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement