পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। - ফাইল ছবি।
নেপালের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভারতের বেশ কিছু এলাকা নিজেদের ভূখণ্ডে দেখিয়ে পাকিস্তানের যে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, বিদেশমন্ত্রকের তরফে তার তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘এই নতুন পাক মানচিত্র আদতে রাজনৈতিক অবাস্তবতা। অর্থহীন। এই হাস্যকর পদক্ষেপের কোনও আইনি বৈধতা নেই। নেই কোনও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাও।’’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইসলামাবাদে পাকিস্তানের ওই নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেন ইমরান খান। সেই মানচিত্রে জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ ও পশ্চিম গুজরাতের কিছু এলাকাকে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে দেখানো হয়েছে।
পাক প্রধানমন্ত্রীর প্রকাশ করা সেই নতুন মানচিত্রের সমালোচনা করতে দেরি করেনি বিদেশমন্ত্রকও। মঙ্গলবারই বিদেশমন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পাকিস্তানের যে তথাকথিত ‘রাজনৈতিক মানচিত্র’ প্রকাশ করেছেন, তা আমাদের নজরে এসেছে। এই নতুন মানচিত্র আদতে রাজনৈতিক অবাস্তবতা। অর্থহীন। ওই মানচিত্রে ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখ এবং একটি পূর্ণাঙ্গ রাজ্য গুজরাতের পশ্চিম অংশের বেশ কিছু এলাকাকে যে ভাবে পাক ভূখণ্ডে দেখানো হয়েছে, তা কখনওই সমর্থন করা যায় না। এই হাস্যকর পদক্ষেপের যেমন কোনও আইনি বৈধতা নেই, তেমনই নেই কোনও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাও।’’
আরও পড়ুন- উৎসবে উদ্বেল অযোধ্যা, গভীরে খেলছে দ্বিধার চোরাস্রোত
আরও পড়ুন- রামমন্দির ঘিরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে চিড় দেখছে বাংলাদেশ?
বিদেশমন্ত্রকের তরফে ওই বিবৃতিতে এও বলা হয়েছে, ‘‘সীমান্তপার সন্ত্রাসের সমর্থন নিয়ে পাকিস্তান যে উপমহাদেশে আগ্রাসনে বিশ্বাসী, নতুন মানচিত্র প্রকাশের মাধ্যমে শুধুমাত্র সেটাই প্রমাণ করল ইসলামাবাদ।’’
গত কাল নতুন মানচিত্র প্রকাশের অনুষ্ঠানে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা অবলোপের সিদ্ধান্তেরও কড়া সমালোচনা করেন পাক প্রধানমন্ত্রী। ওই ধারা অনুযায়ী জম্মু-কাশ্মীর কিছু বিশেষ সুযোগসুবিধা পেত। গত বছরের অগস্টে প্রদানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকার ৩৭০ ধারা অবলোপ করে জম্মু ও কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করে। পাক প্রধানমন্ত্রী গত কাল মোদী সরকারের সেই সিদ্ধান্তকে ‘‘গত বছরের অগস্টের অবৈধ কাজ’’ বলে সমালোচনা করেন।
ইমরান এও জানান, নতুন মানচিত্রটি পকিস্তানের মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। মানচিত্রটির পিছনে সে দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সমর্থন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এখন থেকে এই নতুন মানচিত্রটিই পাকিস্তানের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হবে।’’
জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা অবলোপের সিদ্ধান্তের সমালোচনা গোড়া থেকেই করে আসছে ইসলামাবাদ। এই ইস্যুতে ভারতকে ‘সেন্সর’ করানোর জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জেও চেষ্টার কসুর করেনি পাকিস্তান। কিন্তু আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইসলামাবাদের লাগাতার চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি।
এর পরেই মঙ্গলবার জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ ও পশ্চিম গুজরাতের কিছু এলাকাকে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে দেখিয়ে সে দেশের নতুন ‘রাজনৈতিক মানচিত্র’ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।