খলিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংহ। ফাইল ছবি।
খলিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংহকে গ্রেফতারের বিষয়ে ভারত নেপালের সাহায্য চেয়েছে বলে দাবি সংবাদমাধ্যমের একাংশের। তাদের দাবি, পলাতক অমৃতপাল যাতে নেপাল হয়ে অন্য দেশে পালাতে না পারেন তা নিশ্চিত করতে কাঠমান্ডুকে অনুরোধ করেছে দিল্লি।
জালন্ধরে পঞ্জাব পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে পালানোর পরে দিল্লি-সহ নানা এলাকায় অমৃতপালের ছবি সামনে এসেছে। তিনি সীমান্ত পেরিয়ে নেপালে পালাতে পারেন, এমন আশঙ্কা করেছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাই সীমান্তে এসএসবি-কে সতর্ক করা হয়েছিল।
আজ নেপালের একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, শনিবার কাঠমান্ডুর ভারতীয় দূতাবাস নেপালি বিদেশ মন্ত্রককে একটি চিঠি পাঠায়। তাতে অনুরোধ করা হয়েছে, অমৃতপাল যদি নিজের পাসপোর্ট বা কোনও ভুয়ো পাসপোর্ট ব্যবহার করে নেপাল হয়ে পালাতে চান তবে যেন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অমৃতপাল সংক্রান্ত সব তথ্য নেপালের গোয়েন্দা সংস্থা, হোটেল, উড়ান সংস্থাকে পাঠিয়েছে ভারত।
অন্য দিকে শিখদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংস্থা অকাল তখতের জাঠেদারের অমৃতপাল সংক্রান্ত মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ করেছে খলিস্তানপন্থী সংগঠনগুলি। অমৃতপালকে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিলেন জাঠেদার জ্ঞানী হরপ্রীত সিংহ। সেই সঙ্গে অমৃতপালকে ধরতে না পারায় পঞ্জাব পুলিশের সমালোচনাও করেন তিনি। পাশাপাশি পঞ্জাবের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য কয়েকটি শিখ সংগঠনের বৈঠক ডেকেছেন হরপ্রীত।
শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটির প্রাক্তন সদস্য ও ‘অকাল পুরখ কি ফৌজ’ সংগঠনের প্রধান যশবিন্দর সিংহের বক্তব্য, ‘‘কেবল কয়েকটি সংগঠনকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কি এই বৈঠকে সামগ্রিক শিখ আবেগ মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে?’’ প্রাক্তন জঙ্গি নেতা দালজিৎ সিংহ বিট্টু ও ডাল খালসার সভাপতি হরপাল সিংহ চিমার দাবি, হরপ্রীত সাম্প্রতিক ঘটনায় নিজের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করেননি। অমৃতপালকে আত্মসমর্পণ করতে বলা তাঁর কাজ নয়। বরং ভগবন্ত মান সরকার যখন অমৃতপালের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বহু শিখ যুবককে গ্রেফতার করেছিল তখন তিনি কোনও প্রতিবাদ করেননি। বৈঠক ডেকেছেন ১০ দিন পরে। আবার আজনালা থানায় হামলার সময়ে অমৃতপালের সঙ্গীরা যখন শিখদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ নিয়ে গিয়েছিল তখনও হরপ্রীত প্রতিবাদ করেননি। হরপ্রীতের ডাকা বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলিকে আমন্ত্রণ না জানানোও শিখ নীতির বিরোধী বলে দাবি চিমার।
তবে ধৃত শিখ যুবকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখা নিয়েজাঠেদার সরব হওয়ার পরেই তৎপর হয়েছে পঞ্জাব পুলিশ। আজ তারা জানিয়েছে, আটক ৩৫৩ জনের মধ্যে ১৯৭ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। জাতীয় সুরক্ষা আইনে আটক করা হয়েছে সাত জনকে। গুরুতর অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে ৪০ জন। অমৃতপালের আর এক সহযোগী বারিন্দর সিংহ ওরফে ফৌজিকেও আজ অসমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ নিয়ে অমৃতপালের আট জন সঙ্গীকে অসমের জেলেসরানো হল।