পৃথিবীর ক্ষুধার রাজ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে দেশগুলো, সেই তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে ভারত। শুধু তাই নয়, প্রতিবেশী দেশগুলোর থেকেও পিছিয়ে রয়েছে ভারত।
খিদে মেটানোর নিরিখে তালিকার একেবারে উপরের দিকে রয়েছে চিন। উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রথম ২০-তে উঠে এসেছে ব্রাজিল, চিলি, কিউবা, আর্জেন্তিনা-সহ বেশ লাতিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশ।
ক্ষুধা মেটোনোর নিরিখে উদ্বেগজনক জায়গায় রয়েছে আফ্রিকার তিনটি দেশ— চাঁদ, মাদাগাস্কার এবং তিমর।
শুক্রবার এই তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে ক্ষুধা মেটানোর নিরিখে ভারতের তুলনায় শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল এবং পাকিস্তান ভাল অবস্থানে রয়েছে।
এ বছর মোট ১০৭টি দেশের ক্ষুধার সূচক নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মধ্যে ভারত রয়েছে ৯৪তম স্থানে। ২০১৯-এ ভারতের র্যাঙ্কিং ছিল ১০২।
তালিকায় ৬৪তম স্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, নেপাল ৭৩, বাংলাদেশ ৭৫, পাকিস্তান ৮৮তম স্থানে।
অপুষ্টি, শিশুমৃত্যু, পাঁচ বছরের কমবয়সি শিশুর উচ্চতার তুলনায় কম ওজনের মতো কয়েকটি মাপকাঠিতে বিভিন্ন দেশকে বিচার করে বিশ্ব ক্ষুধা সূচক।
ক্ষুধা সূচকের চারটি মাপকাঠি স্থির করা হয়েছে। সেই মাপকাঠিতে কোনও দেশ ১০-এর নীচে থাকলে সেখানে অভুক্তের সংখ্যা ‘সবচেয়ে কম’। ১০-১৯.৯ এর মধ্যে থাকলে ‘মাঝারি’, ২০-৩৪.৯ বোঝাতে ‘গুরুতর’ এবং সেই মাপকাঠিতে ৩৫ থেকে ৫০-এর মধ্যে ‘উদ্বেগজনক’ এবং ৫০-এর ঊর্ধ্বে কোনও দেশ থাকলে সেখানে পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে চিহ্নিত করা হয়।
ক্ষুধা মেটানোর নিরিখে সবচেয়ে ভাল অবস্থানে রয়েছে ১৭টি দেশ। ক্ষুধা সূচকের মাপকাঠিতে এই দেশগুলো রয়েছে ৫-এর নীচে। ৫-এর বেশি কিন্তু ১০-এর নীচে রয়েছে ৩০টি দেশ।
ক্ষুধা সূচকের মাপকাঠিতে ১০ থেকে ২০-র মধ্যে ২৬টি দেশ এবং ২০ থেকে ৫০-এর মধ্যে রয়েছে ৩৫টি দেশ।
দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়া এবং আফ্রিকায় ক্ষুধা এবং অপুষ্টির মাত্রা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ক্ষুধার সূচকের মাপকাঠিতে এরা যথাক্রমে ২৬.০ এবং ২৭.৮।
ক্ষুধা সূচকের এই মাপকাঠির ১০০-এর মধ্যে ভারতের স্কোর ২৭.২। ফলে ‘গুরুতর’ জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারত। তবে ২০০০, ২০০৬ এবং ২০১২-র তুলনায় এই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ২০১২ সালে ভারতের স্কোর ছিল ২৯.৩, ২০০৬-এ ৩৭.৫ এবং ২০০০ সালে ৩৮.৯।
এই মাপকাঠিতে ১০০-এর মধ্যে শ্রীলঙ্কার স্কোর ১৬.৩, নেপাল ১৯.৫, বাংলাদেশ ২০.৪ এবং পাকিস্তান ২৪.৬।
বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের রিপোর্ট বলছে, ভারতের মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছেন।
ভারতে চাইল্ড স্টান্টিং-এর হার ৩৭.৪ শতাংশ।
পাঁচ বছরের কমবয়সি শিশুর উচ্চতার তুলনায় কম ওজনের বিষয়টি (চাইল্ড ওয়েস্টিং) সবচেয়ে বেশি প্রকট দক্ষিণ এশিয়ায়। ভারতে এই ধরনের ঘটনার হার ১৭.৩ শতাংশ। ২০১৯-এ যা ছিল ২০.৮ শতাংশ।