আউং সান সু চি ফাইল চিত্র।
কোভিড বিধি লঙ্ঘন আর প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গত কাল মায়ানমারের গণতন্ত্রকামী নোবেল শান্তিজয়ী নেত্রী আউং সান সু চি-কে চার বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশন থেকে শুরু করে পশ্চিমি দেশগুলি এ নিয়ে কালই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। আজ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী আজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মায়ানমারের সাম্প্রতিক রায় নিয়ে আমরা খুবই বিচলিত ও উদ্বিগ্ন। এক গণতান্ত্রিক পড়শি হিসাবে ভারত সব সময়ে মায়ানমারের গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের পক্ষে সওয়াল করেছে’।
মায়ানমারে শান্তি ও গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি ফেরাতে দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলিকে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আর্জিও আজ জানিয়েছে নয়াদিল্লি। অরিন্দম বলেছেন, ‘‘কোনও বিষয়ে পড়শি দেশগুলির মধ্যে মতানৈক্য থাকলে অবিলম্বে আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান সূত্র বার করতে হবে।’’
ফেব্রুয়ারিতে মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান হওয়ার পর থেকেই সু চি-সহ দেশের প্রায় সব গণতন্ত্রকামী নেতা-নেত্রীকে গৃহবন্দি করে রেখেছে জুন্টা সরকার। গত কাল প্রাথমিক ভাবে সু চি-কে চার বছরের কারাদণ্ডের সাজা শোনানো হলেও পরে জানানো হয়, সাজা কমিয়ে দু’বছর আটক থাকতে হবে সু চি-কে। বর্তমানে তাঁকে কোথায় রাখা হয়েছে, তা খোলসা করেনি সেনা। তবে জানিয়েছে, ৭৬ বছরের এই নেত্রী এখন যেখানে আছেন, তাঁকে সেখানেই আগামী দু’বছর গৃহবন্দি থাকতে হবে। তাঁর সঙ্গে মায়ানমারের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টেরও চার বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল কাল। সেই সাজাও দু’বছর কমানো হয়েছে পরে।
এত দিন সে ভাবে সরাসরি সেনার বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি ভারত। বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে অশান্তি বৃদ্ধির ভয়েই মূলত চুপ ছিল সাউথ ব্লক। মায়ানমারে গণতন্ত্র ফেরানোর পক্ষে বরাবর সওয়াল করেলও তাই এত দিন সে ভাবে জুন্টার বিরুদ্ধে সরব হয়নি তারা। একই সঙ্গে জুন্টার সমালোচনা করলে তারা চিনের আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়বে, সেই ভয়ও ছিল নয়াদিল্লির। আজও তাই সামরিক সরকারের সমালোচনা না করে মায়ানমারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার উপরে জোর দিয়েছে দিল্লি।