বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মুখ খোলা কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। ফাইল ছবি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কর্নাটকের বিজেপি সরকার। কিন্তু হিজাব ত্যাগের দাবিতে যখন উত্তাল ভারতের দীর্ঘদিনের শক্তি-সহচর ইরান, মুখে কুলুপ বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের।
বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মুখ খোলা কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। কিন্তু কূটনৈতিক মহল মনে করছে, বিষয়টি এতই স্পর্শকাতর যে, কোনও পক্ষ অবলম্বন করা সাউথ ব্লকের পক্ষে সম্ভব নয়। গোটা ঘটনার পিছনে বৃহৎ কূটনৈতিক স্বার্থের প্ররোচনা থাকতে পারে বলেই ধারণা। তাই নাক গলিয়ে সংশ্লিষ্ট কাউকেই চটাতে চাইছে না মোদী সরকার। পাশাপাশি তারা এটাও মনে করাতে চাইছে যে, এখানে সংঘাতের দুই প্রান্তেই রয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়। যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁরাও মুসলিম, যাঁরা তা দমন করছেন তাঁরাও মুসলিম সমাজেরই লোক। ফলে আরএসএস তথা সঙ্ঘ পরিবারের আদর্শগত দায়ও নেই মোদী সরকারের উপরে চাপ দিয়ে পক্ষ অবলম্বন করানোর। হিন্দু সত্তার সঙ্গে এই বিতর্কের সংযোগ নেই।
কূটনৈতিক সূত্রের ব্যাখ্যা, ইরানে মৌলবাদ বিরোধী উষ্মা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে দেখা গিয়েছে। সেই অভ্যন্তরীণ উষ্মাকে কাজে লাগাতে সর্বদা তৎপর থেকেছে ইজ়রায়েলের মতো দেশ। ইজ়রায়েলের পিছনে হাত রয়েছে আমেরিকার। ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে প্রায় ১৬ মাস ধরে আলোচনা সত্ত্বেও পরমাণু চুক্তি নিয়ে এখনও ঐকমত্য দেখা যাচ্ছে না। ইরান ছিল এক সময় ভারতের শক্তি আমদানির সব চেয়ে বড় উৎস। আমেরিকার সঙ্গে ইরানের দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকায় নিষেধাজ্ঞা মেনে সে দেশ থেকে তেল কেনা কমাতে বাধ্য হয় ভারত। অন্য দিকে আমেরিকা এবং ইজ়রায়েল দু’টি দেশই ভারতের কৌশলগত মিত্র ও সমরাস্ত্র, যুদ্ধ সরঞ্জাম থেকে কৃষিপণ্য, বাণিজ্য বহু বিষয়ে নয়াদিল্লি এই দেশগুলির উপরে নির্ভরশীল। আবার তেহরানের সঙ্গেও কূটনৈতিক সম্পর্ক ৭০ বছর পার করেছে। এই অবস্থায় আগ বাড়িয়ে মন্তব্য না-করে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখাই শ্রেয় বলে মনে করছে মোদী সরকার।