গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুন। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোট চলাকালীন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে চাপের কূটনীতি লেগেই রয়েছে ভারতের। বিদেশের মাটিতে খলিস্তানি জঙ্গি নেতা গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুনের হত্যার ষড়যন্ত্রের কৌশল নিয়ে গতকাল আমেরিকার প্রথম সারির দৈনিক ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ সুবিশাল রিপোর্ট প্রকাশ করার পর অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। সেই অস্বস্তির বহর এতটাই যে আজ সকালেই বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রকে একটি বিবৃতি গিয়ে বলতে হয়েছে— একটি গুরুতর বিষয়ে ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগ তোলা হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, “সংগঠিত অপরাধী, সন্ত্রাসবাদী এবং অন্যান্যদের নেটওয়ার্ক নিয়ে আমেরিকার সরকার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু উদ্বেগের কথা আমাদের জানিয়েছিল। তা খতিয়ে দেখতে ভারত সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটির তদন্ত এখনও চলছে। এই আবহে বিষয়টি সম্পর্কে অনুমানমূলক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য একেবারেই সহায়ক নয়।” পাশাপাশি, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব কারিন জন-পিয়ের জানিয়েছেন, আমেরিকার মাটিতে পন্নুনের হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগকে ‘গুরুত্ব’ দিয়ে বিবেচনা করছে ভারত। তবে এই সংক্রান্ত এফবিআই-এর তদন্ত নিয়ে কিছু জানাননি তিনি।
প্রকাশিত ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আমেরিকার মাটিতে খলিস্তানি জঙ্গি নেতা (‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ অবশ্য তাকে মোদী সরকার বিরোধী হিসেবে বর্ণনা করেছে মাত্র) পন্নুনকে হত্যার ব্যর্থ চেষ্টার পিছনে ছিল ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’। রিপোর্টে দাবি, র-এর তৎকালীন প্রধান সমন্ত গয়াল এই হত্যার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছিলেন এবং বিক্রম যাদব নামে এক ‘র’ অফিসার এই পরিকল্পনার সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তিনিই একটি ঘাতক দল ভাড়া করে পন্নুনের যাবতীয় গতিবিধির কথা তাদের জানিয়েছিলেন।
বিদেশ মন্ত্রক ঘরোয়া ভাবে জানিয়েছে, নাটকীয় এই কাহিনি সাজানো হয়েছে— যার সত্যতা বলে কিছু নেই। সেই মর্মে বিবৃতি দিয়ে জানানোও হয়েছে। কিন্তু এটাও ঘটনা যে এমন স্পর্শকাতর সময়ে আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় একটি সংবাদপত্রে কেন এই ধরণের প্রতিবেদন প্রকাশিত হল, তা নিজেদের মতো করে খতিয়ে দেখতে চাইছে সাউথ ব্লক। প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোট চলাকালীন আমেরিকার মানবাধিকার সংক্রান্ত রিপোর্টে মণিপুরের হিংসার উল্লেখ থাকায় কিছুটা হলেও মুখ পুড়েছে মোদী সরকারের। আমেরিকার রিপোর্টে প্রকাশিত হয়, মণিপুরের জাতিহিংসায় ‘উল্লেখযোগ্য ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন’ হয়েছে।