লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে ভারত বিরোধী প্রচারে চলছেই চিনের সরকারি মিডিয়ায়। ছবি: পিটিআই।
লাদাখের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরেই ভারত বিরোধী প্রচারে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমে পড়েছে চিনের সরকারি মিডিয়া। সীমান্ত সংঘাত নিয়ে চিনা সরকারের কূটনৈতিক কার্যকলাপের পাশাপাশি এই বিষয়ে কার্যত সমান্তরাল ভূমিকা নিতে শুরু করেছে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সংবাদমাধ্যমগুলি। আজ সকালেই চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’ সম্পাদকীয়তে লিখেছে, ‘‘সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ভারতকে তাদের দু’টি ভুল ধারণা থেকে সরে আসতে হবে।’’
লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষের ঘটনা উল্লেখ করে সেখানে বলা হয়েছে, ‘‘ভারত-চিন সীমান্তে বারবার যে সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে, তার মূল কারণ নয়াদিল্লির ঔদ্ধত্য। কয়েক বছর ধরেই সীমান্ত নিয়ে কড়া অবস্থান নিচ্ছে ভারত। এর পিছনে তাদের দু’টি ভুল ধারণা কাজ করছে। প্রথমত, তারা মনে করছে, আমেরিকার ক্রমাগত চাপের ফলে ভারতের সঙ্গে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির দিকে এগোবে না বেজিং, ভারতকে জবাব দিতে পারবে না। দ্বিতীয়ত, ভারতের অনেকেরই ভুল বিশ্বাস রয়েছে যে চিনের তুলনায় তাদের সেনাবাহিনী বেশি শক্তিশালী।’’
ওই সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়েছে, ভারত-চিনের সংঘর্ষ হলে তাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চাইবে আমেরিকা। ফলে এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লির সঙ্গে সংঘাতে যেতে চায় না বেজিং। তবে সংঘর্ষের পরিস্থিতি এলেও ভয় পাচ্ছে না চিন। ‘গ্লোবাল টাইমস’ লিখেছে, ‘‘ওই ঘটনার পরেও দু’দেশের নেতৃত্ব সংযম দেখাচ্ছেন। এতে বোঝা যাচ্ছে, তারা সংঘাতের পরিবেশ বাড়িয়ে তুলতে চাইছেন না।’’
আরও পড়ুন: চিনা পণ্য বয়কট বর্জনের ডাক সামলানো যাবে তো?
আরও পড়ুন: লাদাখে চিনা হামলার কথা বাকি বাহিনী প্রায় ছ’ঘণ্টা পরে জানতে পারে!
চিনা কমিউনিস্ট পার্টির আর একটি মুখপত্র এবং সেখানকার সর্বাধিক প্রচারিত সংবাদপত্র ‘পিপলস ডেলি’-ও ভারতের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করে দিয়েছে। সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘শিনহুয়া’-র খবরকে সামনে রেখে তারা বলেছে, ‘‘ভারতীয় সেনা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে অবৈধ কাজের জন্য প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে গিয়েছিল। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল তারা, চিনা সেনাকে আক্রমণ করেছিল।’’ ওই সেনাকর্তা আরও বলেছেন, ‘‘ভারত তাদের সেনাবাহিনীকে সংযত করুক। উত্তেজনা বাড়তে পারে, এমন কাজগুলি দ্রুত বন্ধ করে আলোচনার পথে ফিরে আসুক।’’
‘গ্লোবাল টাইমস’-এ আর একটি খবর ও ভিডিয়ো নজর কেড়েছে। লাদাখে টানাপড়েনের মধ্যে গত ৭ জুন এটি পোস্ট করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, সীমান্ত সংঘাতের মধ্যে চিনের হুবেই প্রদেশ থেকে দেশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে চিন-ভারত সীমান্তের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় পৌঁছে গিয়েছে কয়েক হাজার সেনা, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। তবে কয়েক ঘণ্টাতেই প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় কী ভাবে পৌঁছে গেল চিনা সেনা, সেই প্রশ্ন উঠছে।