ছবি: সংগৃহীত
দু’দেশের মধ্যে কৌশলগত এবং প্রতিরক্ষা সমঝোতাকে জোরদার করতে এক নতুন মডেল ‘টু প্লাস টু’ তৈরি করেছিল ভারত এবং আমেরিকা। বিদেশ এবং প্রতিরক্ষা পর্যায়ের এই পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠকে যোগ দিতে ওয়াশিংটনে পৌঁছেও গিয়েছেন এস জয়শঙ্কর এবং রাজনাথ সিংহ। কিন্তু কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কথায়, নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দিল্লি-সহ গোটা দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতি ছায়াপাত করতে চলেছে আসন্ন এই বৈঠকটিতে।
গত রাতেই সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক কড়া বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘‘আমরা নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে যে সব ঘটনা ভারতে ঘটছে, তার দিকে গভীর ভাবে নজর রাখছি। শান্তিপূর্ণ জমায়েত করার অধিকারকে সুরক্ষিত করা এবং তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে সরকারকে অনুরোধ করছি।’’ পাশাপাশি, বিক্ষোভকারীদের হিংসামুক্ত থাকতেও অনুরোধ করা হয়েছে। এর আগে দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চল অগ্নিগর্ভ হয়ে যাওয়ার পরেও সুর চড়া করা হয়েছিল আমেরিকার পক্ষ থেকে। মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল, ভারতের সংবিধান এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সে দেশের সরকার যেন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত রাখে। ইউএস হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি টুইট করে মোদী সরকারকে স্মরণ করিয়ে দেয়, ‘ভারত এবং আমেরিকা দু’দেশেরই মূল ভিত হল ধর্মীয় বহুত্ববাদ।’ সে দেশের প্রভাবশালী স্বশাসিত সংস্থা ‘ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ আরও কট্টর অবস্থান নিয়ে অমিত শাহের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির প্রস্তাবও তোলে।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ‘টু প্লাস টু’ সংলাপের ঠিক আগে এই বার্তা দিয়ে জামিয়া মিলিয়া-র সাম্প্রতিক পুলিশি হিংসার ঘটনাটিকেও আলোচনায় নিয়ে আসতে চাইছে ওয়াশিংটন। জয়শঙ্কর এবং রাজনাথের কাছে এই আইন সংক্রান্ত খুঁটিনাটি জানতে চাইবে মার্কিন সরকার। তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন সে দেশের বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো এবং প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক টি এস্পার। আমেরিকার সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনার প্রস্তুতি যে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে, তা স্পষ্ট করেছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার। জানিয়েছেন, আমেরিকায় নিযুক্ত ভারতীয় মিশন সে দেশের কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভারতের বক্তব্য শোনাতে শুরু করে দিয়েছেন। সাউথ ব্লক আশা করছে, এই বিলের মর্মার্থ বোঝার পর তাঁরা এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবেন।