(বাঁ দিকে) ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবার। ছবি: পিটিআই।
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ভারত এবং ইউক্রেনের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যমাত্রা যে পর্যায়ে পৌঁছেছিল, তা সেখানে ফেরানো নিয়ে ঐকমত্য হল নয়াদিল্লি ও কিভ। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবার তিন দিনের নয়াদিল্লি সফরের শেষে এ কথা জানা গিযেছে।
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রতিনিধিদল নিয়ে বৈঠক করেছেন কুলেবার সঙ্গে। সেখানেই স্থির হয়েছে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়া যাবে। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, সাউথ ব্লকের ভারসাম্যের কূটনীতির এ এক বড় সাফল্য। আমেরিকা তথা পশ্চিমি বিশ্বের রক্তচক্ষুকে আমল না দিয়ে রাশিয়া থেকে ধারাবাহিক ভাবে অপরিশোধিত তেল সস্তায় আমদানি করেছে ভারত, যুদ্ধের মধ্যেই। রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়া-বিরোধী প্রস্তাবে ভোটদানে বারবার বিরতও থেকেছে নয়াদিল্লি। তবে একই সঙ্গে, ইউক্রেনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং তাঁর দূত জয়শঙ্কর। ফোনে বারবার দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে কথা হয়েছে।
জয়শঙ্কর এবং কুলেবা আলোচনা করেছেন যুদ্ধ থামানোর প্রশ্নে কিভ-এর দেওয়া শান্তি সূত্র নিয়ে। এই সূত্র প্রত্যাখ্যান করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সুইৎজারল্যান্ডের উদ্যোগে এ বছরের গ্রীষ্মে রাশিয়া এবং ইউক্রেন নেতৃত্বকে এক টেবিলে বসানোর চেষ্টা হচ্ছে। সেখানে ভারত যাতে শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠায়, সে জন্য জয়শঙ্করকে অনুরোধ করেছেন ইউক্রেনের মন্ত্রী।
বৈঠকের পর গত রাতে জয়শঙ্কর এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, 'সমস্ত ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও পোক্ত করার বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লিখিত হয়েছে।
আমাদের লক্ষ্য, অবিলম্বে বাণিজ্যকে আগের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া।' ২০২১ সালে ভারত-ইউক্রেন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ৩৩৮ কোটি ডলার। তা ২০২২-এ নেমে দাঁড়ায় ২৫৮ কোটি ডলারে। ইউক্রেনে ভারতের রফতানি কমেছে প্রায় ২৩ শতাংশ। ইউক্রেন থেকে ভারতে আমদানি কমেছে ১৭.৩ শতাংশ।
নয়াদিল্লির সঙ্গে বৈঠকের পর কুলেবা পোস্ট করে বলেছেন, 'দু'পক্ষই একমত, রাশিয়া পুরোদস্তুর যুদ্ধ ঘোষণার আগে যে পর্যায়ে আমাদের সহযোগিতা ছিল সেখানে পৌঁছতে হবে। নতুন কিছু প্রকল্পও চিহ্নিত করা হচ্ছে, যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পরবর্তী পর্যায়ে পৌঁছয়।'