ফাইল চিত্র।
ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কার্যত স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। কিন্তু তারই মধ্যে ‘সৌহার্দপূর্ণ ভাবে’ দিল্লিতে দু’দেশের মধ্যে সিন্ধু জল কমিশনের ১১৮তম বৈঠকটি হল। বৈঠকে যোগ দিতে পাকিস্তানের সিন্ধু জল কমিশনার মহম্মদ মেহের আলি শাহের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ভারতে এসেছিল। বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, দু’পক্ষের আলোচনায় স্থির হয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্যগুলির সমাধান করে নেওয়া হবে। আজকের বৈঠকে কমিশনের শেষ বার্ষিক রিপোর্টটি সই করা হয়।
টানা ৯ বছরের আলোচনার পরে ১৯৬০ সালে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় সিন্ধু জলচুক্তি সই করে ভারত ও পাকিস্তান। চুক্তি অনুযায়ী, বিতস্তা ও চন্দ্রভাগার জলের উপরে পাকিস্তানের অধিকার ৮০ শতাংশ, ভারতের ২০ শতাংশ। ভারত ওই জল ব্যবহার করলেও তা আটকাতে পারবে না, এই শর্তও ছিল চুক্তিতে। কিষেণগঙ্গা ও রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে ভারত জল আটকে দিচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে এই বিষয়ে গত বছরই বিশ্ব ব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপ চেয়েছিল পাকিস্তান। তাদের অভিযোগ ছিল, কিষেণগঙ্গা ও রাতলে প্রকল্পের নকশায় ত্রুটি রয়েছে। ফলে সিন্ধু জলচুক্তির শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে। বিষয়টি মেটাতে বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছে সালিশি আদালত গড়ার আর্জি জানায় পাকিস্তান। নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞকে দিয়ে প্রকল্পের নকশা পরীক্ষা করানোর আর্জি জানায় ভারত। শেষ পর্যন্ত অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে নয়াদিল্লি অনুমতি পায়।
বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই জলচুক্তির মাধ্যমে ছ’টি আন্তর্রাষ্ট্রীয় নদী থেকে ৮০ শতাংশ জল পাকিস্তানে যায়। বিষয়টিকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোটাই পাকিস্তানের কৌশল। কূটনীতিকরা মনে করেন, উচ্চ অববাহিকায় থাকা রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের উচিত নিজের অধিকার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক স্তরে সরব হওয়া।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।